bdstall.com

করোনা ভাইরাস কি? এর প্রতিরোধ ও ভুল ধারনাসমুহ

চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র চিনেই ৩ হাজারের বেশিজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে সংক্রমিত হয়েছে ১১ হাজারেরও অধিক । তাই যে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করছে। যেহুতু ভাইরাসটি নতুন তাই এখনো পর্যন্ত এর প্রতিসেধক বা এন্টিমেডিসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তাই কিছু সর্তকতা অবলম্বন করে ভাইরাসটি প্রতিরোধ করাই সর্বোত্তম পন্থা।

 

করোনা ভাইরাস কি?

 

করোনা ভাইরাস এমন একটি ভাইরাস যা সাধারণ ঠান্ডা লাগার মত করেই প্রথমে আক্রান্ত করে ফুসফুসকে । তারপর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা তৈরি করে এবং আসতে আসতে এটা মারাত্মক আকার ধারন করে আর তখনি হাসপাতালে যেতে হয়।

ভাইরাসটির অনেক ধরনের প্রজাতি আছে তবে এর মধ্যে মাত্র ৭টি প্রজাতি মানুষের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতোমধ্যে মিউটেট করছে, অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে। ফলে এটি আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে । এবং তারা এটিও নিশ্চিত করেছেন যে এটি সংক্রমিত মানুষের শরীর থেকেও ছড়াতে পারে।

 

উৎপত্তি

 

করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর; আর তাই ঐ শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। তবে ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেরনি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সম্ভবত কোনও প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনও মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে ।

 

করনা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষন

 

১। জ্বর 

২। ঠাণ্ডা

৩। কাশি

৪। শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা

আপনার যদি এই লক্ষনগুলো দেখা দেয় তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

 

বাংলাদেশে এই ভাইরাসের ঝুকি

 

যেহুতু করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে তাই বাংলাদেশ এটির সর্বোচ্চ ঝুকিতে রয়েছে। কারন ইতিমধ্যে ফ্রান্স , জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ভিয়েতনামে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাই বাংলাদেশেও এটি সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদিও বাংলাদেশ সরকার করোনা ভাইরাসের জন্য বাড়তি সর্তকতা গ্রহন করেছে তারপরও বাংলাদেশের মানুষের উপর ঝুকি থেকেই যায়। আর যদি একবার বাংলাদেশে এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে থাকে তাহলে এটা প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৮ মার্চ, ২০২০ তারিখে বাংলাদেশ ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনার যে ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করেছে তার নাম কোভিড-১৯ । এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের সঠিক কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয় নি তাই প্রতিরোধই এ থেকে বাচার এক মাত্র উপায়।

 


করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় করণীয়

 

/ নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া : যে কোন কাজ করার পর এবং বাহির থেকে বাসায় যাওয়ার সাথে সাথে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

২/ হাচি বা কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু ব্যবহার করুন : হাচি কাশি দেওয়ার সময় টিস্যু অথবা রোমাল ব্যবহার করুন। টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলুন এবং রোমাল ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।

/ মাস্ক ব্যবহার করুন : জনসমাগমে বের হলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। এতে ধুলাবালি থেকেও রক্ষা পাবেন। 

৪/ কাচা খাবার এড়িয়ে চলুন : যেকোন কাচা খাবার এড়িয়ে চলুন খেলেও ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন অথবা ভালোভাবে রান্না করুন।
 


 

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহ হলে করনীয়

 

আপনার যদি জ্বর, কাশি এবং শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনি সম্প্রতি কোথায় ভ্রমণ করেছেন, সেসব কথা তাকে খুলে বলুন।


 

করোনা নিয়ে কিছু ভুল তথ্য

 

১। আইসক্রিম এবং ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চললে করোনা সংক্রমণের সূত্রপাত রোধে সহায়ক হতে পারে । যেটা সম্পূর্ণই ভুল ধারনা।
 

২। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রসুনের কোন ভূমিকা নেই ।


৩। গরম পানি খেয়ে বা ব্যবহার করে করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।


৪। মাস্ক ব্যাবহার করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তবে কেউ আক্রান্ত হলে অবশ্যই তার মাস্ক ব্যাবহার করা উচিৎ।


 

সামাজিক দিক থেকে করনীয়

 

১। মাস্ক, হ্যান্ডওয়াস জাতীয় পণ্যের দাম না বাড়ানো। 


২। দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম হাতের নাগালে রাখা। 


৩। জনসমাগম হবে এমন পরিবেশ এড়িয়ে চলা।

৪। ভুল তথ্য সামাজিক মাধ্যমগুলোতে না ছড়ানো। সামাজিক মাধ্যম ব্যাবহারে সচেতন থাকা। 


 

ধর্মীও দৃষ্টিকোণ থেকে করনীয় (ইসলাম)
 

"মহামারী পীড়িত গ্রাম বা শহরে প্রবেশ নিষেধ। পক্ষান্তরে কেউ যদি পূর্ব থেকেই আক্রান্ত যায়গায় থেকে থাকে তাহলে সেখান থেকে পলায়ন করাও নিষেধ। মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পলায়ন করা জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করার মতোই অপরাধ।" - বুখারী


এছাড়া করোনাসহ সকল রোগ থেকে বাচতে এই দোয়া পড়তে পারেনঃ  

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ، وَالْجُنُونِ، وَالْجُذَامِ، وَمِنْ سَيِّئِ الأَسْقَامِ

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আউযু বিকা মিনাল বারাস্বি অলজুনূনি অলজুযা-মি অমিন সাইয়্যিইল আসক্কা-ম।

অর্থঃ হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট ধব্বল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সকল প্রকার কঠিন ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (আঃ দাঃ ২/৯৩ সঃ তিঃ ৩/১৮৪, সঃ নাঃ ৩/১১ ১৬)

 

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: March 10, 2020
Reviews (0) Write a Review