bdstall.com

কোন ল্যাপটপ ভালো ? কোন কাজের জন্য কোন ধরনের ল্যাপটপ

বর্তমান যুগ প্রযুক্তির যুগ। আর কম্পিউটার হল এর অনেক বড় একটি অংশ। কম্পিউটার সাধারণত ২ ধরনের হয়। ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং ডেক্সটপ কম্পিউটার। তবে ডেক্সটপ এর তুলনায় ল্যাপটপ অনেক ছোট হওয়ার কারনে এর জনপ্রিয়তা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। হয়তো আপনিও সারা বছরের জমানো টাকায় বাজেটের মধ্যে এবার একটা মনের মতো ল্যাপটপ কেনার কথা ভাবছেন। কিন্তু বাজারে এতো এতো মানের ল্যাপটপ আছে যেখান থেকে আপনার কাঙ্খিত ল্যাপটপটি খুঁজে বের করাই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ল্যাপটপ কেনার পূর্বে এ বিষয়ে জেনে নিন কিছু তথ্য এবং ল্যাপটপের দাম এখান থেকে দেখে নিতে পারেন।

 

প্রথমেই ঠিক করুন ঠিক কি কাজে আপনি ল্যাপটপটি কিনছেনঃ

 

স্ট্যান্ডার্ড ল্যাপটপঃ স্ট্যান্ডার্ড ল্যাপটপ অনলাইন ক্লাস, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ভিডিও চ্যাট এবং কনফারেন্স, ই-বই পড়া এবং অফিস সফটওয়্যার এই ধরনের কাজের জন্য ভাল। এই ধরনের ল্যাপটপে ইন্টেল সেলেরন, কোরআই-৩ বা রাইজেন-৩ প্রসেসর ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মূল্য ৪০-৪৫ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

 

প্রফেসনাল ল্যাপটপঃ এগুলোতে শক্তিশালী হার্ডওয়্যার থাকে। এগুলো ফ্রিল্যান্সিং, প্রোগ্রামিং, এবং অন্যান্য প্রফেসনাল কাজের জন্য ভাল।  কোরআই-৫ বা রাইজেন সিরিজের এর সর্বশেষ জেনারেশন ব্যবহার করা হয়। এগুলোর মূল্য ৬০-৬৫ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

 

বিজনেস ল্যাপটপঃ যদি ব্যবসায়িক কাজে ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে কম ওজনের ছোটখাটো আলট্রাবুক কেনাই ভাল। ল্যাপটপের ওজন ১.৫ কেজির নিচে হলে ভালো হয় এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ যেন ৬ ঘণ্টার উপর হয়। কোর আই সেভেন প্রসেসর, ৮ জিবি র‍্যাম, এসএসডি স্টোরেজ এবং ডেডিকেটেড গ্রাফিক্সের ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন। 

 

গেমিং বা গ্রাফিক্স এডিটিং ল্যাপটপঃ যদি গেম খেলার জন্য উপযুক্ত ল্যাপটপ খোঁজেন তাহলে কোর আই সেভেন প্রসেসর, ১৭ ইঞ্চি স্ক্রিন, ৮ থেকে ১৬ জিবি র‍্যাম, এসএসডি অথবা হাইব্রিড স্টোরেজ এবং ৪ - ৮ জিবি ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স আছে এমন ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন।

 

আরো স্পষ্ট ধারনা পেতে নিচের পয়েন্টগুলো ভাল করে দেখে নিনঃ

 

১। প্ল্যাটফর্ম নির্বাচন করুনঃ ম্যাক, উইন্ডোজ নাকি ক্রোম ওএস- আপনি যদি ম্যাক বা পিসির সাথে পরিচিত না হয়ে থাকেন তাহলে এই প্রশ্নটির উত্তর আপনার জন্য খানিকটা কঠিন হবে। প্রত্যেকটি প্ল্যাটফর্মের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিন।


• উইন্ডোজ - এটি হচ্ছে সবচেয়ে সহজবোধ্য অপারেটিং সিস্টেম। ক্রোম ওএস ও ম্যাকের তুলনায় উইন্ডোজের অনেকগুলো মডেল আছে। উইন্ডোজে টাচ স্ক্রীন থেকে শুরু করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার, ডুয়েল গ্রাফিক্স চিপসহ নানান রকমের ফিচার আছে। উইন্ডোজ ১০ হচ্ছে মাইক্রোসফট ফ্লাগশিপ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ যা উইন্ডোজ ৭ ও ৮ এর তুলনায় কিছু বাড়তি সুবিধা প্রদান করে। উইন্ডোজ ১০ এ আছে ট্যাবলেট থেকে ডেক্সটপ মোডে পরিবরতনের ক্ষমতা, লাইভ টাইলসসহ রিভাম্পড্‌ স্টার্ট মেনু এবং শক্তিশালী করটানা ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট। অবশ্য ২০১৫ সালের জুলাই তে বাজারে আসার পর উইন্ডোজ ১০ আরও কিছু ইমপ্রুভমেন্ট এনেছে যা হলো ফলও-আপ প্রশ্নের ব্যবহার, সহজাত ভাষা ব্যহারের মাধ্যমে ইমেইল খোজা এবং স্টাইলাস দ্বারা যেকোনো স্থানে লিখা।

 

• অ্যাপেল ম্যাকওএস - সব ম্যাকবুকেই আছে অ্যাপেলের ডেক্সটপ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ ম্যাকওএস সিয়ারা। অল্প কিছু ভিন্নতা বাদে সামগ্রিকভাবে এই অপারেটিং সিস্টেমের কার্যকারিতা প্রায় উইন্ডোজ ১০ আর মতই। এর ইন্টারফেস উইন্ডোজ থেকে হালকা ভিন্ন এবং এতে করটানা ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্টের পরিবর্তে সিরি ব্যবহৃত হয়। ম্যাক ব্যবহারকারীরা অ্যাপেল পে চেকের মাধ্যমে লেনদেন করতে, অ্যাপেল ঘড়ির মাধ্যমে ল্যাপটপ আনলক করতে এবং মোবাইলের মাধ্যমে কল ও টেক্সট আদান-প্রদান করতে পারে। ম্যাকবুকে কোনও টাচ স্ক্রীন নেই। অ্যাপল ল্যাপটপের মূল্য দেখুন এখানে

 

• ক্রোম ওএসগুগল ওএস খুবই সাধারণ ও নিরাপদ কিন্তু সীমিত। এর ইউজার ইন্টারফেস উইন্ডোজের মতই কিন্তু এর প্রধান অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে ক্রোম ব্রাউজার। এর অসুবিধা হচ্ছে অফলাইনে থাকা অবস্থায় প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ভালোমতো কাজ করেনা। কিন্তু ক্রোমবুক সস্তা ও হালকা হওয়ায় ওয়েব ব্রাউজিং, ইমেইল চেক, সোশাল মিডিয়া ব্যবহার ও অনলাইন চ্যাটিং এর জন্য বেশ ভালো। এর ব্যাটারি লাইফও যথেষ্ট ভালো।

 

২। আপনি কি ২-ইন-১ চান তা নির্ধারণ করুনঃ বর্তমানে অনেক ২-ইন-১ ক্যাটাগরির ল্যাপটপ আছে যা গতানুগতিক ক্ল্যামশেল মোড, ট্যাবলেট মোড এবং আরও বিভিন্ন মোডে পরিবর্তিত হতে পারে। ২ ধরনের ২-ইন-১ ল্যাপটেপর একটিতে আছে ডিটাচেবল স্ক্রীন যা কীবোর্ড থেকে পুরোপুরি আলাদা করা যায় ও অপরটি নমনীয় ল্যাপটপ যা ৩৬০ ডিগ্রী পর্যন্ত ঘুরিয়ে মোড পরিবর্তন করা যায়। আপনার যদি ল্যাপটপকে ট্যাবলেট হিসেবে ব্যবহারের প্রয়োজন না পরে তাহলে আপনি অপেক্ষাকৃত কম দামে অনেক শক্তিশালী ল্যাপটপ পাবেন।

 

৩। প্রসেসরঃ ল্যাপটপ কিনার পূর্বে আপনি নিশ্চিত হয়ে নিন যে ঠিক কি কাজের জন্য আপনি ল্যাপটপটি কিনতে যাচ্ছেন। কেননা আপনার কাজের ধরনের উপরই প্রসেসর এর মান নির্ধারণ করতে হবে। যেমন আপনি যদি ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে চান কিংবা কম্পিউটার এ মুভি দেখতে চান বা গান শুনতে চান তাহলে আপনার জন্য ডুয়েল কোর অথবা কোর আই থ্রি প্রসেসরই যথেষ্ট। মনে রাখবেন প্রসেসর এর ক্ষমতা যত বেশি হবে ল্যাপটপ এর দামও তত বেশিই হবে। কিন্তু যদি আপনি ল্যাপটপ এ গ্রাফিক্স এর কাজ করতে চান কিংবা এইচডি গেম খেলতে চান তাহলে আপনার আর উন্নত প্রসেসর এর দরকার হবে। যেমন কোর আই ৫, কোর আই ৭ ইত্যাদি। 

 

• ইন্টেল কোর আই৫ - মূল্য এবং কর্মক্ষমতা সমন্বয় করে মূলধারার সবচেয়ে জনপ্রিয় সিপিইউ ইন্টেল কোর আই৫। যেসব প্রসেসর মডেলের শেষে ইউ আছে সেগুলো প্রচলিত মডেল। মডেলে ওয়াই আছে যেগুলোতে সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম কর্মক্ষমতাসম্পন্ন। এইচকিউ মডেলগুলোর ৪টি কোর থাকে। ইন্টেলের সর্বশেষ প্রজন্ম হচ্ছে 'কাবি লেইক' সিপিইউ যার মডেল নাম্বার ৭ দিয়ে শুরু হয়। এটির কর্মক্ষমতা অপেক্ষাকৃত সবচেয়ে ভালো।

 

• ইন্টেল কোর আই৭ - এটি ওয়ার্কস্টেশন ও গেমিং এর জন্য প্রচলিত। এইচকিউ ও কে মডেলের প্রসেসরগুলো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এবং এগুলোর ৪টি কোর থাকে। যার ফলে প্রসেসরগুলোর কর্মক্ষমতা আরও অনেক বেড়ে যায়। ওয়াই সিরিজের চিপগুলো অপেক্ষাকৃত কম কর্মক্ষমতাসম্পন্ন। ইন্টেল কোর আই৭ এর সর্বশেষ প্রজন্মের মডেলগুলোতে ৭ আছে।

 

• ইন্টেল কোর আই৩ - এর কার্যক্ষমতা ও মূল্য দুটোই কোর আই৫ আর চেয়ে একটু কম।

 

• এএমডি এ, এফএক্স বা ই সিরিজ - চিপগুলো স্বল্পমূল্যের ল্যাপটপে পাওয়া যায়। একে সাধারণত সিপিইউ না বলে এপিইউ বলা হয়। মূল্য অনুসারে এগুলো যথাযোগ্য পারফর্মেন্স দিয়ে থাকে।

 

• ইন্টেল অ্যাটম - এই চিপগুলো অতি সাশ্রয়ী মূল্যের ল্যাপটপে পাওয়া যায়। চিপগুলো ব্যাসিক পারফর্মেন্স দিয়ে থাকে। এর একটি সুবিধা হচ্ছে এর ব্যাটারি লাইফ ইন্টেল পেন্টিয়াম বা সেলেরনের থেকে বেশি।

 

• ইন্টেল পেন্টিয়াম / সেলেরন - এগুলো অ্যাটমের তুলনায় একটু দ্রুত কাজ করে।

 

• ইন্টেল জেনোন্ - এগুলো বড় মোবাইল ওয়ার্কস্টেশনে ব্যবহৃত অত্যন্ত শক্তিশালী ও ব্যয়বহুল প্রসেসর। আপনি যদি প্রফেশোনাল ইঞ্জিনিয়ারিং, থ্রিডি মডেলিং বা ভিডিও এডিটিং করেন থাকেন তাহলে হয়তো আপনি এই প্রসেসর কেনার কথা চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু এটি অপেক্ষাকৃত অনেক ভারী হবে এবং এর ব্যাটারি লাইফ খুবই সীমিত।

 

 

৪। র‍্যামঃ বর্তমান ল্যাপটপ গুলোতে ২ জিবি থেকে ৮ জিবি পর্যন্ত র‍্যাম দেখা যায়। যদি আপনার বাজেট খুব অল্প হয় তাহলে আপনি ২ জিবি র‍্যাম এর ল্যাপটপই নিতে পারেন। তবে বাজেট অনুযায়ী হলে ৪ জিবি র‍্যামই ভাল। আর ৮ জিবি হলেতো কথাই নেই। র‍্যাম এর বাস স্পীডটা ভালো করে দেখে নিন। বাস স্পীড যত বেশি হয় তত ভালো। তবে কম হলেও তেমন কোনো সমস্যা নেই। এবার দেখে নিন র‍্যামটি DDR2 নাকি DDR3। DDR2 এর তুলনায় DDR3 ভালো।

 

 

৫। স্ক্রিনঃ স্ক্রিন যত বড় হয় তত ভালো। এক্ষেত্রে আপনি ১৫" স্ক্রিনের ল্যাপটপ নিতে পারেন। তবে আপনার যদি খুব বেশি যাতায়াত এর প্রয়োজন পড়ে তাহলে ১৩" কিংবা ১৪" ল্যাপটপও নিতে পারেন। এদিক দিয়ে এলসিডি ডিসপ্লে এর তুলনায় এলইডি ডিসপ্লেই ভালো। এলইডি ডিসপ্লেতে লাইট সোর্স হিসেবে এলইডি ব্যাকলিট ব্যবহার করা হয় অপরদিকে এলসিডি ডিসপ্লেতে লাইট সোর্স হিসেবে ফ্লুরোসেন্ট লাইট ব্যবহার করা হয়। তবে ডিসপ্লের রেজুলেসন যত বেশি হয় তত ভালো। 

 

• ১১ থেকে ১২ ইঞ্চি - এ সাইজের ল্যাপটপগুলো সবচেয়ে হালকা ও পাতলা হয়। এগুলোর ওজন সাধারণত ২.৫ থেকে ৩.৫ পাউন্ড হয়ে থাকে।

 

• ১৩ থেকে ১৪ ইঞ্চি - বহনযোগ্যতা ও ব্যবহারযোগ্যতার দিক থেকে এই সাইজের ল্যাপটপগুলো সর্বোত্তম যদি তা ৪ পাউন্ডের নিচে হয়ে থাকে।

 

• ১৫ ইঞ্চি - এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সাইজ এবং সাধারণত ৪.৫ থেকে ৬.৫ পাউন্ড ওজনের হয়ে থাকে। আপনার যদি বড় স্ক্রীনের প্রয়োজন হয় এবং আপনি যদি ল্যাপটপ নিয়ে চলাচল করতে না চান তাহলে এই সাইজটি আপনার জন্য শ্রেয়।

 

• ১৭ থেকে ১৮ ইঞ্চি - আপনি যদি ল্যাপটপটিকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে চান এবং আপনার যদি গেম খেলার প্রতি আকর্ষণ থেকে থাকে তাহলে এই সাইজটি নির্বাচন করতে পারেন।

 

• ডিসপ্লে রেজুলেসন - কন্টেন্ট ধারন ক্ষমতা নির্ভর করে পিক্সেলের উপর। যত বেশি পিক্সেল ছবি তত বেশি স্পষ্ট হবে। মূলধারার ল্যাপটপগুলোতে সাধারণত ১৩৬৬ x ৭৬৮ পিক্সেলের ডিসপ্লে থাকে। কিন্তু বাজেট খানিকটা বাড়ালে ১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেলের বা ফুল এইচডি ডিসপ্লে পাওয়া যাবে। এছাড়াও ২৫৬০ x ১৬০০, ৩২০০ x ১৮০০, ৩৮৪০ x ২১৬০ পিক্সেলের ল্যাপটপও আছে। কিন্তু এগুলো বেশি বিদ্যুৎ খরচ করে থাকে যার ফলে ব্যাটারি লাইফ কমে যায়।

 

• টাচস্ক্রীন - ২-ইন-১ ল্যাপটপ ছাড়া টাচস্ক্রীনের তেমন একটি সুবিধা নেই। ব্যাটারি লাইফও ৩ ভাগের ১ ভাগ হবে। শুধু ২-ইন-১ ল্যাপটপের টাচস্ক্রীন হয় মানসম্পন্ন।

 

 

৬। স্টোরেজঃ স্টোরেজ  সাধারণত ২ ধরনের হয়। এসএসডি এবং হার্ডডিস্ক।

 

• এসএসডি- এসএসডি মূলত কম্পিউটারের একধরনের ফ্ল্যাশ স্টোরেজ ব্যবস্থা। যার মূল কাজ হল তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা। ওজনে হালকা এবং আকারে ছোট হওয়ায় দিন দিন এই এসএসডির জনপ্রিয়তা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং হার্ড ড্রাইভ এর প্রচলন কমে আসছে। এসএসডিতে হার্ড ড্রাইভের মত কোন ডিস্ক থাকে না। এতে কয়েকটি ইলেকট্রিক চিপ থাকে যা ডাটা সংরক্ষনের কাজটি করে। এই এসএসডি স্টোরেজ ব্যবস্থা হার্ড ড্রাইভ এর তুলনায় অনেক দ্রুত কাজ করে। কয়েক মাইক্রো সেকেন্ডের মধ্যে এর থেকে ডাটা পাওয়া যায় যা হার্ড ডিস্কের করতে কয়েক মিলি সেকেন্ড সময় লেগে যায়। PCIe x4 এসএসডি প্রচলিত সাটা ড্রাইভ থেকে ৩ গুন দ্রুত। ইএমএমসি মেমরিগুলো টেকনিক্যালি এসএসডি হলেও তা হার্ড ডিস্কের চেয়ে দ্রুত না। আপনার বাজেট বেশি হলে এসএসডি স্টোরেজের ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন। তবে হার্ডডিস্ক এর তুলনায় এসএসডি কিছুটা ব্যায়বহুল। 

 

• এইচডিডি- হার্ড ডিস্ক বর্তমানে ২৫০ জিবি থেকে ২ টেরাবাইট পর্যন্ত পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনার চাহিদা অনুযায়ী হার্ডডিস্ক নিন। আপনার যদি বেশি ডাটা ব্যাকআপ রাখার প্রয়োজন হয় তাহলে ৭৫০ জিবি কিংবা ২ টেরাবাইট এর হার্ডডিস্ক নিতে পারেন। নাহলে ৫০০ জিবি হার্ডডিস্কই যথেষ্ট। হার্ডডিস্ক নির্ধারণ করার সময় এর আরপিএম ভালো করে দেখে নিন। আরপিএম যত বেশি হবে ফাইল ট্রান্সফার এর গতি তত বেশি হবে।

 

তবে গেমার বা গ্রাফিক্স এর কাজের জন্য হাইব্রিড বা এসএসএইচডি সবচেয়ে ভাল। কারণ কম খরচে অধিক ডাটা সংরক্ষণ করা যায় আবার স্পীড ভাল পাওয়া যায়।

 

৭। গ্রাফিক্সঃ আপনি যদি কম্পিউটারে উচ্চমানের গেমস খেলতে চান কিংবা হাই-রেজুলেসন এর ভিডিও এডিটিং করতে চান তাহলে ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স নিবেন। এক্ষেত্রে এর পারফর্মেন্স ভালো হবে। কিন্তু সাধারন কাজের জন্য  ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্সই যথেষ্ট। বাজারে বর্তমানে ২-৮ জিবি ডেডিকেটেড গ্রাফিক্সের ল্যাপটপ পাওয়া যায় যা আপনাকে উচ্চ মানের গ্রাফিক্সের কাজ এবং হাই এন্ড থ্রিডি গেমগুলোতে অসাধারণ পারফর্মেন্স দিবে।

 

 

গেমিং ল্যাপটপ দেখুন এখানে

 

 

৮। ডিভিডি/ব্লু-রে ড্রাইভঃ যেহেতু সব সফটওয়্যার ও মুভি ডাউনলোড করা যায় তাই খুব কম ল্যাপটপেই অপটিক্যাল ড্রাইভ রয়েছে। আপনার পছন্দের ল্যাপটপটিতে যদি অপটিক্যাল ড্রাইভ না থাকে তাহলে একটি এক্সটারনাল ড্রাইভ কিনে নিতে পারবেন।

 

 

৯। কীবোর্ড ও টাচপ্যাড চেক করুনঃ আপনি যদি ল্যাপটপে প্রচুর কাজ করার পরিকল্পনা করে থাকেন তাহলে কীবোর্ডের সলিড টেকটাইল ফিডব্যাক, ভারটিক্যাল ট্র্যাভেল(সাধারণত ১ থেকে ২ এমএম) এবং কিগুলোর মাঝখানে যথেষ্ট পরিমাণ জায়গা আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন। সঠিক টাচপ্যাড নির্বাচন করুন যা মাল্টি টাচ সংকেতে ধারাবাহিকভাবে সাড়া দেয়। খেয়াল রাখবেন যাতে টাচপ্যাডের কার্সার জাম্পি না হয়। আপনি যদি একটি বিজনেস ল্যাপটপ ক্রয় করতে চান তাহলে জি এবং এইচ বাটনের মাঝে পয়েন্টিং স্টিক আছে এমন একটি ল্যাপটপ বাছাই করতে পারেন কারন এতে করে আপনি কীবোর্ডের হম রো থেকে হাত না সরিয়েই নেভিগেশনের কাজ করতে পারবেন।

 

১০। নেটওয়ার্কঃ ল্যাপটপ এ ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই, ইউএসবি পোর্ট আছে কিনা এবং তার সংখ্যা কত তা ভালো ভাবে জেনে নিন। ইউএসবি ৩.০ এবং এইচডিএমআই ২.০ হল সর্বশেষ আবিষ্কৃত প্রযুক্তি।

 

১১। ব্যাটারি ব্যাকআপঃ ল্যাপটপ কিনার পূর্বে অবশ্যই এর ব্যাটারি ব্যাকআপ সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে নিন। ব্যাকআপ যত বেশি হবে আপনিও তত বেশি সুবিধা পাবেন। কেননা আমাদের দেশে লোডশেডিং এর সমস্যা খুব বেশি।

 

ল্যাপটপ ব্যাটারির মূল্য তালিকা

 

১২। বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনাঃ আজকাল ৪০,০০০ টাকার মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী ল্যাপটপ পাওয়া যায়। তবে বাজেট বাড়ালে অপেক্ষাকৃত ভালো ল্যাপটপ পাওয়া যাবে।
 

• ২০,০০০ টাকা - এগুলো হচ্ছে সবচেয়ে কম বাজেটের ল্যাপটপ। আজকাল এই বাজেটে ভাল ল্যাপটপ পাওয়া কঠিন। তাই আপনার বাজেট এরূপ হলে আপনি পুরাতন ল্যাপটপ কিনতে পারেন তাতে আপনি কম খরচে ভাল মানের ল্যাপটপের স্বাদ পেতে পারবেন

 

২৫,০০০ থেকে ৪৫,০০০ টাকা - ৪৫,০০০ টাকার মধ্যে ইন্টেল কোর আই৩ বা এএমডি রাইজেন-৩ সিপিইউ, ৪ জিবি র‍্যাম, ৫০০জিবি / ১টিবি হার্ড ড্রাইভ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ফিচারসহ ল্যাপটপ পাবেন। কিন্তু এই মূল্যের বেশিরভাগ ল্যাপটপে এসএসডি ড্রাইভ, ফুল এইচডি ডিসপ্লে ও দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফ হবেনা।

 

• ৪৫,০০০ থেকে ৬৫,০০০ টাকা - এই মূল্যে প্রিমিয়াম মানের ল্যাপটপ পাওয়া যাবে। মেটাল ডিজাইন, এসএসডি, ফুল এইচডি ডিসপ্লে ইত্যাদি এই মূল্যের সব ল্যাপটপেই আছে।

 

• ৭০,০০০ থেকে বেশি এই মূল্যে উন্নতমানের শক্তিশালী, বহনযোগ্য, হাই রেজোলিউশান, দ্রুত প্রসেসর ও গ্রাফিক্স কার্ড সংবলিত ল্যাপটপ পাবেন।

 

১৩। ব্র্যান্ড ভ্যালুঃ ল্যাপটপ কেনার পূর্বে অবশ্যই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপের মান বিবেচনা করবেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টেকনিক্যাল সাপোর্ট বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তাছাড়া ব্র্যান্ডগুলো বাজারে কিভাবে প্রতিযোগিতা করছে তাও জেনে নেয়া ভালো।

 

১৪। ওয়ারেন্টিঃ ওয়ারেন্টিযুক্ত ল্যাপটপ কেনার চেষ্টা করুন এতে করে ভবিষ্যতে কোন সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় সাপোর্ট পাবেন।

 

বিঃদ্রঃ 

>> কেনার পূর্বে ল্যাপটপটি বেশি গরম হয় কিনা জেনে নিন নাহলে পরবর্তীতে আপনাকে কুলার ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।

>> চার্জারের পিনটি যেন মোটা পিনের হয় কেননা চিকন পিনের স্লটটিতে বিভিন্ন সময় বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়।

>> ওয়ারেন্টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। ভবিষ্যতে ভালো সাপোর্ট পেতে এটি খুবই জরুরি। বাংলাদেশে প্রচলিত বিভিন্ন প্রকার ওয়ারেন্টি সম্পর্কে এখানে জানতে পারবেন।

>> কমমূল্যের কোন অফার দেখে হুটহাট করে ল্যাপটপ কিনতে যাবেন না। ভালো করে যাচাই বাচাই করে তারপরই সিদ্ধান্ত নিন।

 

 

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: May 12, 2022
Reviews (1) Write a Review
PURE PLUS CORPORATION
PURE PLUS CORPORATION | 23 April 2019 02.27 AM
Good thinking about it