bdstall.com

হিসাব করার সফটওয়্যার

আইটেম ১-২০ এর ২১

একাউন্টিং সফটওয়্যার হচ্ছে এমন এক ধরণের কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশন, যা ছোট ব্যবসা থেকে শুরু করে কর্পোরেট অফিস, ব্যাংক কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান সমূহের আর্থিক লেনদেনের তথ্য রেকর্ড করার পাশাপাশি রিপোর্ট তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে, বাংলাদেশে একাউন্টিং সফটওয়্যার ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীসহ প্রায় সকল ধরণের ব্যবসার জন্য অপরিহার্য হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

একাউন্টিং সফটওয়্যার এর গুরুত্ব

একটি ব্যবসায় সাফ্যলের পিছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হলো পুরো ব্যবসার আয় ব্যয়ের যথাযথ হিসাব রাখা এবং সেই অনুযায়ী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাই ব্যবসায়ীরা নানান উপায়ে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হিসাব রাখার চেষ্টা করে থাকে। অনেক ব্যবসায়ীরাই হিসাব নিকাশের জন্য এখনো খাতা, কলম, ক্যালকুলেটর ইত্যাদির উপর নির্ভর করে আছে যার ফলে এই বিষয়টির উপর প্রচুর সময় ও শ্রম বিনিয়োগ হয়ে তাকে। ফলে ব্যবসা বড় করতে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টে প্রচুর ঘাটতি দেখা যায়। ডাবল এন্ট্রি অ্যাকাউন্টিং সফ্টওয়্যার সহজেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে।

একাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে খুব সহজেই ব্যবসার সকল হিসাব রাখতে পারা যায় এবং যেহুতু এটি সফটওয়্যার ও কম্পিউটার নির্ভর তাই এটি খুব দ্রুত কাজ করতে পারে। পাশাপাশি এটি ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ায় এটা ব্যবহার করার জন্য আলাদা কোন দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে হবে না। একটি একাউন্টিং সফটওয়্যার দিয়ে একই সাথে অনেকগুলো কাজ করা যায়। যেমন এটি দিয়ে গ্রাহকদের রিসিপ্ট দিতে পারা যায় খুব সুন্দর ও অর্গানাইজ ওয়েতে। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৈনিক, মাসিক ও বাৎষ্যরিক আয় ব্যায়ের হিসাবও খুব সহজে করা যায়। আরো একটি বড় সুবিধা হলো একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করার ফলে প্রতিষ্ঠানের ডেটা হারিয়ে যাওয়ার কোন সম্ভবানা নেই কারণ এখন অনেক একাউন্টিং সফটওয়্যারের ডেটা ক্লাউড সার্ভারের মাধ্যমে স্টোর করা থাকে এবং তার ব্যাকআপও রাখা থাকে। এছাড়াও এটি দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোন স্থান থেকে ব্যবস্যার বর্তমান অবস্থা দেখা যায়।

একাউন্টিং সফটওয়্যারে কি ধরণের ফিচার থাকে?

ইনভয়েস প্রসেসিংঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার সিস্টেমে মৌলিক চাহিদা অনুযায়ী ইনভয়েস প্রসেসিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া, ইনভয়েস প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে একাউন্টিং সফটওয়্যারে কে কিসের মালিক, কোন ব্যবসায়ীর পেমেন্ট আসছে, কার পেমেন্ট বকেয়া আছে তা তারিখ অনুযায়ী ট্র্যাক রাখতে সাহায্য করে।

পে-রুলঃ একাউন্টিং সফটওয়্যারের অন্যতম ফিচার হচ্ছে পে-রুল সিস্টেম। পে-রুল সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন ভাতাসহ যাবতীয় খরচ সমূহ একাউন্টিং সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করা যায়। এছাড়াও, ঘন্টা ভিত্তিক নিয়োজিত কর্মচারীদের বেতন, ভাতা দৈনিক বা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে প্রদান করতে সহায়তা করে।

বাজেট পূর্বাভাসঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহারের বাংলাদেশে ছোট ব্যবসা থেকে বড় পরিসরে ব্যবসার ক্ষেত্রে বর্তমানের ব্যবসায়িক খরচ এবং পরবর্তী বছরের খরচ সমূহের পূর্বাভাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। ফলে, ব্যবসায় বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রার অনুমান এবং প্রোডাকশনের পরিমাণ সম্পর্কে ধারণা পেতে সহায়তা করে।

ব্যাংকিং সিস্টেমঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যাংকিং সেক্টরে বিরামহীন ও মসৃণ অপারেশন পরিচালনা করতে সহায়তা করে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহারের ফলে ব্যাংকে একাউন্ট হোল্ডারের যাবতীয় তথ্য, লেনদেন এবং মাল্টিপল একাউন্ট ট্র্যাক করা সহ যাবতীয় বিষয় রিয়েল টাইম অ্যাক্সেস করার সুবিধা পাওয়া যায়।

অনলাইন পেমেন্টঃ বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কাজে লেনদেন করার জন্য অনলাইন পেমেন্ট খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহারে প্রায় সকল পেমেন্ট গেটওয়কে একত্রিত করে কোম্পানি এবং গ্রাহক উভয়ই অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা পায়।

ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টঃ কিছু অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং করার সুবিধা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা ব্যবসার স্টক লেভেল পরিচালনা করতে, পণ্য বিক্রয় ট্র্যাক করতে এবং ইনভেন্টরি মান এবং টার্নওভারের রিপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করে।

রিয়েল টাইম রিপোর্টিংঃ অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হচ্ছে রিয়েল-টাইম ট্রানজেকশন রিপোর্ট এবং ট্র্যাক করার সুবিধা। রিয়েল-টাইম রিপোর্টিং করার ফলে কোম্পানীর খরচ, বিক্রয় এবং ইনভেন্টরি সহ সমস্ত আর্থিক লেনদেন সহজেই গণনা করা যায় এবং ট্র্যাক রাখা যায়।

বুককিপিং অটোমেশনঃ অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার রুটিন মাফিক বুককিপিং এর মত কাজগুলো যেমন চালান, ব্যাংক রিকন্সিলেশন এবং পে-রুল ইত্যাদি বিষয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে থাকে। যার ফলে ম্যানুয়াল ত্রুটি হ্রাস করে এবং সময় বাঁচায়।

ট্যাক্স ম্যানেজমেন্টঃ একাউন্টিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে বকেয়া ট্যাক্স গণনা, ট্যাক্স রিপোর্ট তৈরি এবং ট্যাক্স রেগুলেশনের সাথে সম্মতি নিশ্চিত করে ট্যাক্স-সম্পর্কিত যাবতীয় প্রক্রিয়াকে সহজ করে। যার ফলে ট্যাক্স ফাইলিং প্রক্রিয়াকে সহজ হয়।

এছাড়াও, বাংলাদেশে সাশ্রয়ী দামে কাস্টমাইজড একাউন্টিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়, যা চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা ডেভেলপারের সাহায্য নিয়ে পরিবর্তন করা যায়।

বাংলাদেশে কি কি ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার পাওয়া যায়?

১। এডভান্স একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ এডভান্স একাউন্টিং সফটওয়্যার সাধারণ হিসাবনিকাশের বাইরেও এডভান্স ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট, মাল্টি কারেন্সি, বাজেট পূর্বাভাস, ফিক্সড অ্যাসেট ম্যানেজম্যান্ট সহ উন্নত ফিচার প্রদান করে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার বড় পরিসরে ব্যবসার পাশাপাশি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর জন্য জটিল একাউন্টিং প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে। বাংলাদেশে এডভান্স একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫৫,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

২। ইনভেন্টরি ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যারঃ ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার মূলত স্টক লেভেল ট্র্যাক এবং পরিচালনা, পণ্যের গতিবিধি, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া এবং ইনভেন্টরি মূল্যায়ন এবং টার্নওভারের রিপোর্ট তৈরি করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার ইনভেন্টরি লেভেল অপ্টিমাইজ, হোল্ডিং খরচ কমানো, স্টকআউট এড়াতে এবং সাপ্লাই চেইন অপারেশনকে স্ট্রীমলাইন করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে ইনভেন্টরি ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যার ২০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৩। পে-রুল একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ পে-রুল একাউন্টিং সফটওয়্যার দিয়ে বেতন গণনা, ট্যাক্স চার্জ, এডমিনিস্ট্রেশন বেনিফিট এবং বেতন স্টাব তৈরি সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানীর বেতনের প্রক্রিয়াকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সহজ করে। তাছাড়া, এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার সঠিক এবং সময়মত বেতন প্রদান নিশ্চিত করে, ট্যাক্স এবং লেবার রেগুলেশন মেনে চলতে সহায়তা করে। বাংলাদেশে পে-রুল একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৪। ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যার মূলত মৌলিক অ্যাকাউন্টিং নিয়ম অনুসরণ করে, প্রতিটি আর্থিক লেনদেন কমপক্ষে দুটি অ্যাকাউন্টকে প্রভাবিত করে। এটি ডেবিট এবং ক্রেডিট এন্ট্রিগুলির সুষম সেট বজায় রাখে, সঠিক আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত রেকর্ড নিশ্চিত করে। পাশাপাশি ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যার বড় পরিসরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির লেনদেন সমূহ বড় পরিসরে রিপোর্ট তৈরি করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশে ডাবল এন্ট্রি একাউন্টিং সফটওয়্যার ৪৫,০০০ টাকা থেকে ৫৫,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৫। ইআরপি/ক্লাউড একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং বা ক্লাউড ইআরপি একাউন্টিং সফটওয়্যার মূলত ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট, সেলস, হিউম্যান রিসোর্স সহ আরও অনেক ব্যবসায়িক ফাংশনকে একত্রিত করে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি প্রত্যকটি ডিপারট্ম্যান্টের রিয়েল-টাইম ডেটা অ্যাক্সেস, সহযোগিতা এবং সাজানোর প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, ব্যবসার সামগ্রিক দক্ষতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে কার্যকর ভাবে সহায়তা করে। বাংলাদেশে ইআরপি/ক্লাউড একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫৫,০০০ টাকা থেকে ১২০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৬। ইজি একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ ইজি অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার মূলত ছোট পরিসরে ব্যবসা এবং কম অ্যাকাউন্টিং জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস,মসৃণ ওয়ার্কফ্লো প্রদান করে। পাশাপাশি, ইনভয়েসিং, খরচ ট্র্যাকিং এবং লেনদেন রিপোর্ট সহ সাধারণ একাউন্টিং কাজ করা যায়। বাংলাদেশে ইজি একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫৫,০০০ টাকা থেকে ৬৫,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৭। অনলাইন একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ অনলাইন একাউন্টিং সফটওয়্যার সাধারণত ওয়েব-বেসড প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কাজ করে, যা ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে যেকোনো জায়গা থেকে নিরাপদে লেনদেন সংক্রান্ত ডেটা অ্যাক্সেস করতে সহায়তা করে। এটি মসৃণ, নির্ভরযোগ্য এবং দূরবর্তীভাবে অ্যাক্সেস সক্ষমতা প্রদান করায়, দূরবর্তী অবস্থান থেকে ব্যবসার জন্য আদর্শ অনলাইন একাউন্টিং সফটওয়্যার। বাংলাদেশে অনলাইন একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৮। ভ্যাট ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যারঃ ভ্যাট ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যার মূলত ভ্যাট-সম্পর্কিত প্রক্রিয়া যেমন ভ্যাট গণনা, রিপোর্টিং পরিচালনা করতে ব্যবসায়িদের সহায়তা করে৷ তাছাড়া, এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার সঠিক ভ্যাট গণনা নিশ্চিত করে, ভ্যাট রিটার্ন জেনারেট করে এবং ব্যবসায়িকদের জন্য নির্ধারিত ভ্যাট রেগুলেশন মেনে চলতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে ভ্যাট ম্যানেজম্যান্ট একাউন্টিং সফটওয়্যার ৮০,০০০ টাকা থেকে ৯০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

৯। ইনভেয়স এন্ড বিলিং একাউন্টিং সফটওয়্যারঃ ইনভয়েস এবং বিলিং একাউন্টিং সফটওয়্যার সাধারণত চালান এবং পেমেন্ট তৈরি, পাঠানো এবং ট্র্যাকিং করতে সহায়তা করে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনভয়েস জেনারেট করে, পেমেন্ট স্ট্যাটাস ট্র্যাক করে, রিমাইন্ডার পাঠায় এবং রিপোর্ট তৈরির সক্ষমতা প্রদান করে। ফলে, বিলিং প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং উন্নত ক্যাশ ফ্লো ম্যানেজম্যান্ট প্রদান করে। বাংলাদেশে ইনভেয়স এন্ড বিলিং একাউন্টিং সফটওয়্যার ১৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

১০। অডিট ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যারঃ অডিট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ব্যবসার ক্ষেত্রে অডিট প্রক্রিয়াকে দক্ষ এবং স্বয়ংক্রিয় করতে সহায়তা করে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার অডিট পরিকল্পনা, চেকলিস্ট তৈরি, ফলাফলগুলো নথিভুক্ত করা, প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ ট্র্যাক করা এবং সবশেষে অডিট রিপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করে। বাংলাদেশে অডিট ম্যানেজম্যান্ট একাউন্টিং সফটওয়্যার ৫০,০০০ টাকা থেকে ৬০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে পাওয়া যায়।

অফ-শেল্ফ বা কাস্টমাইজড অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যার- কোনটি ভাল?

কিছু অ্যাকাউন্টিং সফ্টওয়্যার কম দামে অনেক বৈশিষ্ট্য সহ রেডিমেড হিসাবে বিক্রি হয়। তবে, বাংলাদেশে অনেক অ্যাকাউন্টিং নিজস্ব পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় ফলে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কাস্টমাইজ করা ভাল। তখন, এটি আপনার ব্যবসায়ের জন্য নিখুঁত ফলাফল সরবরাহ করতে পারবে।

আর কী কী বৈশিষ্ট্য দেখা উচিত?

সফ্টওয়্যারটি অবশ্যই খুব দ্রুত এবং ব্রাউজার ভিত্তিক হওয়া উচিত যাতে যেকোন স্থান থেকে এটি অ্যাক্সেস করা যায়। ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজনীয়তা আসে তবে যেন সফ্টওয়্যারগুলিতে তা যোগ করা। সফটওয়্যারটি যেন ইনভেন্টরি সিস্টেম, পেরোল ম্যানেজমেন্ট, লিভ সিস্টেম এর সাথে যুক্ত হতে পারে সেই ব্যবস্থা থাকা।

বাংলাদেশে একাউন্টিং সফটওয়্যার কিনতে কত খরচ হয়?

বাংলাদেশে একাউন্টিং সফটওয়্যারের অনেক সস্তা এবং সর্বনিম্ন ৬,৯৯৯ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। বাজারে রেডিমেট একাউন্টিং সফটওয়্যার খুব কম দামে পাওয়া যায় যেমন ২০,০০০ টাকার ভিতর ভাল মানের একাউন্টিং সফটওয়্যার পাওয়া যাবে এবং এগুলোতে একাউন্টিং এর সকল সুবিধার পাশাপাশি বিভিন্ন রিপোর্টিং পাওয়া যায় যেগুলো কোম্পনির জন্য ভাল। আর নিজের চাহিদা মত তৈরী করে নিতে হলে খরচ একটু বেশি পড়বে আর সময়ও বেশি লাগবে কিন্তু কাজের সব প্রয়োজনীয় জিনিস একদম পাওয়া যাবে।  তবে ছোট খাট হিসাব নিকাশের কাজের জন্য কম দামের রেডিমেট একাউন্টিং সফটওয়্যার যথেষ্ট হবে কিন্তু বড় কোনো হিসাব করার ক্ষেত্রে বেশি দামের একাউন্টিং সফটওয়্যার সাথে কিছু কাস্টোমাইজ করে নিলে হবে। তাই বলা যায়, বাংলাদেশে একাউন্টিং সফটওয়্যারের দাম নির্ধারিত হয় বিভিন্ন সুবিধা, কাস্টোমাইজেশন এবং অন্যান্য বিশেষত্বের উপর নির্ভর করে।

বাংলাদেশে একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার আগে কি কি বিষয় যাচাই করতে হবে?

  • ফিচার ও ফাংশনঃ ব্যবসার প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদা অনুযায়ী ফিচার এবং ফাংশন সম্পন্ন একাউন্টিং সফটওয়্যার বিবেচনা করতে হবে। এছাড়াও ইনভয়েসিং, খরচ ট্র্যাকিং,লেনদেন রিপোর্ট, ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট এবং ডবল এন্ট্রি সহায়তার মতো ফিচার সমূহ অবশ্যই যাচাই করতে হবে।
  • ইন্টারফেসঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার আগে অবশ্যই ইন্টারফেস ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং নেভিগেট করা সহজ কিনা তা যাচাই করতে হবে। এছাড়াও, একাউন্টিং সফটওয়্যারটি ব্যবহারে জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ সহায়তা পাওয়া যাবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।
  • স্কেলেবিলিটিঃ ব্যবসার বৃদ্ধির সম্ভাবনা বিবেচনা করে একাউন্টিং সফটওয়্যারের স্কেলেবিলিটি বিবেচনা করতে হবে, যা লেনদেনের পরিমাণ বাড়াতে এবং আর্থিক চাহিদা প্রসারিত করতে সহায়ক হবে৷
  • স্থানীয় ট্যাক্স কমপ্লায়েন্সঃ একাউন্টিং সফটওয়্যারটি ভ্যাট ম্যানেজম্যান্ট, ট্যাক্স ফাইলিং সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ট্যাক্স রেগুলেশনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।
  • ডেটা সুরক্ষাঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডেটা নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই, একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার ক্ষেত্রে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে ডেটা এনক্রিপশন, ব্যবহারকারীর অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ডেটা ব্যাকআপ সহ শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিবেচনা করতে হবে।
  • ইন্টিগ্রেশন সক্ষমতাঃ ব্যবসায় অন্যান্য সফটওয়্যার সিস্টেমের সাথে একাউন্টিং সফটওয়্যার ইন্টিগ্রেশন করা যাবে কিনা তা যাচাই করতে হবে। ইন্টিগ্রেশন সক্ষমতা মূলত বিভিন্ন সিস্টেমের মধ্যে ডেটা আদান প্রদানে সহায়তা করে পাশাপাশি ম্যানুয়াল ডেটা এন্ট্রি হ্রাস করে এবং উন্নত দক্ষতা নিশ্চিত করে।
  • ভেন্ডর রেপুটেশনঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যোই ভেন্ডর রেপুটেশন এবং ট্র্যাক রেকর্ড পর্যালোচনা করতে হবে। কারণ নির্ভরযোগ্য ভেন্ডর প্রয়োজনের সময় সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি সফটওয়্যারটির মসৃণ অপারেশন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
  • বাজেট যাচাইঃ একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ফিচার সমূহ যাচাইয়ের পাশাপাশি বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।
  • মোবাইল অ্যাক্সেসঃ যেকোনো অবস্থান থেকে একাউন্টিং সফটওয়্যারের ডেটা অ্যাক্সেস এবং পরিচালনা করার জন্য সহজ মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল। তাই, একাউন্টিং সফটওয়্যার কেনার আগে ডেডিকেটেড মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েব-বেসড ইন্টারফেসের মাধ্যমে মোবাইল অ্যাক্সেস সুবিধা পাওয়া যাবে কিনা তা যাচাই করতে হবে।

ফ্রী একাউন্টিং সফটওয়্যার দিয়ে কি ছোট ব্যবসা পরিচালনা করা যায়?

হ্যা, ফ্রী একাউন্টিং সফটওয়্যার দিয়ে ছোট ব্যবসা পরিচালনা করা যায়। তবে, এডভান্স ফিচার সমূহ অ্যাক্সেস করার ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট চার্জ প্রদান করতে হয়। তবে, কাস্টমাইজড একাউন্টিং সফটওয়্যার ব্যবহার করার উত্তম, কারণ ব্যবসায়িক লেনদেন, কাজের পরিধি অনুযায়ী যেকোনো ফিচার ব্যবহার করা যায়।

বাংলাদেশের সেরা হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার এর মূল্য তালিকা April, 2024

হিসাবরক্ষণ সফটওয়্যার মডেল বাংলাদেশে দাম
Easy Accounting Software ৳ ৫০,০০০
ERP Software for Feed Mill Management ৳ ৫৮,০০০
Bangla Accounting Inventory Billing Software ৳ ২৫,০০০
Invoice And Billing Software ৳ ৯,৫০০
Accounting Software with Inventory ৳ ৪৫,০০০
Gym Management Software ৳ ১০,০০০
ERP Software for Office ৳ ৫০,০০০
ERP Software Development ৳ ১০০,০০০
ERP Business Management Software ৳ ৮৫,০০০
Online Accounting Software ৳ ৩৫,০০০