হেয়ারিং এইড কি?
হেয়ারিং এইড বিশেষ ধরনের একটি যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা বাহিরের পরিবেশের শব্দের মান বৃদ্ধি করে ব্যক্তির শ্রবণ শক্তির মাত্রা উন্নয়ন করে। এটি সাধারণত যে সকল মানুষ কানে কম শুনতে পায় তাদের জন্যই ব্যবহৃত হয়।
কি ধরনের হিয়ারিং এইড ভাল?
বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত ডিজিটাল হিয়ারিং এইডগুলো বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে। আপনার পছন্দ অনুযায়ী আপনি বেছে নিতে পারেন।
কম্পিলিটলি ইন ক্যানেল হিয়ারিং এইড (সিআইসি): এই ধরণের হিয়ারিং এইড কানের ভিতরে বা গভিরে প্রবেশ করনো যায় যা বাহিরে থেকে কম দৃশ্যমান হয়। এর মধ্যে একটি ক্ষুদ্র কনসোল থাকে ফলে বাহিরের শব্দ কানের ভিতরে সহজেই প্রবেশ করতে পারে। এই ধরনের হিয়ারিং এইডের ব্যাটারি ব্যাক-আপ ভাল থাকে। এটি কানের ভিতর থেকে বাহিরে বের করতে হলে স্ট্রিং এর সাহায্যে বের করতে হয়।
ইন-দ্য ক্যানেল হিয়ারিং এইড (আইটিসি): আইটিসি এর পূর্ণ রূপ হচ্ছে ইন-দ্যা ক্যানেল। এটিও কানের ভিতরে বা গভিরে ঢুকানো থাকে। আইসিটি তুলানামূলক একটু বড় হওয়ায় বাহিরে থেকে অল্প পরিমানে বুঝা যায়। বাহিরের শব্দের ফ্রিকোয়েন্সি কম থাকলেও এটি ভাল কাজ করতে পারে।
ইন দ্যা ইয়ার (আইটিই): এই হিয়ারিং এইডে ডিভাইসটি কানের বাহিরে থাকে। ডিভাইসে থাকা মাইক্রোফোন, টেলিকয়েল এবং ওয়্যারলেস স্ট্রিমিং ব্যবহার করার মত সুবিধাও থাকে এবং এটি সহজে ব্যবহার করা যায়।
বিহাইন্ড-দ্য ইয়ার (বিটিই): বিহান্ড হিয়ারিং এইড কানের আকৃতির মত হয়ে থাকে এবং ভিতরে থাকা রিসিভার বাহিরের শব্দকে ভিতরের কানে প্রেরণ করে। এই ডিভাইসে একটি পাতলা পর্দা থাকে যা কানের সাথে একেবারে সংযুক্ত করা যায়। পর্দা টি খুব সূক্ষ হওয়ায় বাহিরে থেকে ঠিকভাবে বুঝা যায় না। কম ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ শোনার জন্য এমবিটিআই মেশিনটি ব্যবহার করা হয়। এই ডিভাইসগুলো কিছুটা ছোট আকৃতিরও পাওয়া যায় যেগুলোকে মিনি বিহান্ড হিয়ারিং এইড বলে।
আর কি কি সুবিধা থাকলে ভাল হয়?
নয়েস রিডাকশনঃ আধুনিক প্রযুক্তির হিয়ারিং এইডগুলো এমন ভাবে সেটিং করা থাকে যা ব্যকগ্রাউন্ড শব্দ ফিল্টার করার ক্ষমতা রাখে। তাছাড়াও এর ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যে ব্যকগ্রাউন্ডেরশব্দ শনাক্ত করে এটি কমিয়ে ফেলা যায়। তাই নয়েস রিডাকশন থাকলে ভাল হয়।
রিচার্জেবল ব্যাটারিঃ রিচার্জেবল হিয়ারিং এইডগুলোতে বিল্ট-ইন ব্যাটারি সুবিধা থকায় এটি বার বার সরানোর প্রয়োজন হয় না। যখন ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যায় তখন ডিভাইস থেকে চার্জ দিয়ে স্বভাবিক ভাবে ব্যবহার করা যায়।
রেডিওঃ রেডিও সুভিধা তাহলে আপনি তা উপভগ করতে পারবেন।
ওইয়াইফাই, ব্লুটুথ এবং স্ট্রিমিংঃ নেটওয়ার্কে কানেক্ট হয়ে আপনি বিভিন্ন কিছু শুনতে পারবেন।
হিয়ারিং এইড কেনার আগে কি কি বিবেচনা করতে হবে?
১। হিয়ারিং এইড কেনার আগে অবশ্যই কানের বিশেষজ্ঞ থেকে পরামর্শ নিতে হবে।
২। প্রয়োজন অনুসারে কোন ধরনের হিয়ারিং এইড কিনবেন তা বিবেচনা করতে হবে।
৩। ভবিষ্যতের প্রইয়োজনের কথা মাথায় রেখে নির্দিষ্ট চ্যানেল সহ হিয়ারিং এইড নির্বাচন করতে হবে।
৪। হিয়ারিং এইড নিয়মিত ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট আরামদায়ক কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।
৫। যেহেতু প্রতিনিয়ত হিয়ারিং এইড ব্যবহার করতে হবে তাই, হিয়ারিং এইড এর গুণমান বিবেচনায় নির্দিষ্ট হিয়ারিং এইড নির্বাচন করতে হবে।
৬। হিয়ারিং এইড একবার চার্জ করলে কতক্ষণ ব্যাটারি ব্যাকআপে সক্রিয় থাকে তা বিবেচনা করতে হবে।
৭। প্রয়োজন অনুসারে আধুনিক প্রযুক্তি যেমন নয়েস ফিল্টারিং, স্মার্টফোনে কানেক্টিভিটি, ব্যাটারী রিচার্জএবিলিটি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হিয়ারিং এইড কিনতে হবে।
বাংলাদেশে হিয়ারিং এইড এর দাম কত?
হিয়ারিং এইড এর দাম এর ধরণ, ব্র্যান্ড, মডেল, চ্যানেল সংখ্যা, প্রযুক্তি, এবং বৈশিষ্ট্যর ভিত্তিতে কমবেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে হিয়ারিং এইড এর দাম সর্বনিম্ন ৪৫০ টাকা হয়ে থাকে যা একটি ২-চ্যানেল বিটিই হিয়ারিং এইড। তাছাড়া, ৪-চ্যানেল সম্পন্ন হিয়েরিং এইড কিনতে কমপক্ষে ১,০০০ টাকা খরচ করতে হবে। অন্যদিকে, আধুনিক প্রযুক্তি সহ উচ্চ গুণমান সম্পন্ন হিয়ারিং এইড কেনার জন্য ১০,০০০ টাকার বেশী খরচ করতে হবে।