মিনি প্রেক্টরের চাহিদা বাংলাদেশে ব্যপক ভাবে বেড়ে চলেছে। সভা, সেমিনার, ক্লাশরুম, সম্মেলন, ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মিনি প্রজেক্টরের দেখা পাওয়া যায়। এই প্রজেক্টরগুলো আকৃতিতে ছোট হওয়ার কারণে সহজে বহন করা যায় তাই এগুলোকে পোর্টেবল প্রজেক্টর বা মোবাইল প্রজেক্টর বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এই মিনি প্রজেক্টরের দাম কম হওয়ার কারণে সব ধরনের গ্রাহকেরা এটি সহজে কিনতে পারেন।
বিডিতে মিনি প্রজেক্টরের দাম কত?
বিডিতে একটি মিনি প্রজেক্টরের দাম ২,৮০০ টাকা থেকে শুরু এবং এটি ৪০০-৬০০ লুমেনের হয়ে থাকে। এই প্রজেক্টরগুলোর বেশিরভাগ প্রযুক্তি এলসিডি হওয়ায় কম টাকায় ভাল মানের ছবি প্রদর্শন করা যায়। বাংলাদেশে এখন কিছু স্মার্ট বা অ্যান্ড্রয়েড মিনি প্রজেক্টর পাওয়া যাচ্ছে যেগুলোর দাম মোটামুটি ১৫,০০০ টাকা থেকে শুরু।
মিনি প্রজেক্টর কেনার আর কি কি বৈশিষ্ট্য দেখা উচিত?
বিডিতে বিভিন্ন প্রযুক্তির মিনি প্রজেক্টর পাওয়া যায়। সঠিক মিনি প্রজেক্টর যেভাবে পাওয়া সম্ভব তার কিছু টিপস নিচে আলোচনা করা হলোঃ
১। মিনি প্রজেক্টরের শুরুই হয়েছে সিআরটি প্রযুক্তি দ্বারা। এটি তিনটি আলাদা রঙের সমন্বয়ে সবুজ, লাল, এবং নীল স্ক্রীনের উপর ছবি বা ভিডিও তৈরি করার জন্য আলো ছড়ায়। এটি প্রত্যেকটি আলোর বিন্দু গুলো একত্রিত হয়ে স্ক্রীনের উপর একত্রিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ রঙের ছবি বা ভিডিও তৈরি করে থাকে। এটি মূলত এইচডি টিভি, ডিভিডি প্লেয়ার এবং এ জাতীয় ডিভাইস থেকে একটি স্বচ্ছ পর্দায় ছবি বা ভিডিও প্রদর্শন করতে পারে। তাই এ জাতীয় ডিভাইজ থেকে ছবি বা ভিডিও দেখতে চাইলে এটি কেনা যাবে।
২। বিডিতে বর্তমানে জনপ্রিয় মিনি প্রজেক্টরের তালিকাতে শীর্ষে অবস্থান করছে এলসিডি মিনি প্রজেক্টর। এই মিনি প্রজেক্টরের ভিতরে একটি ছোট এলসিডি স্ক্রীন লাগানো থাকে যা ছবি বা ভিডিও প্রদর্শন করে থাকে। এটির স্ক্রীনের সামনে একটি ম্যাগ্নিফাইড লেন্স লাগানো থাকে যা ছোট স্ক্রীনের ছবি বা ভিডিওকে আয়তনে বড় করে স্বচ্ছ পর্দায় ছবি বা ভিডিও প্রদর্শন করে।
৩। নতুন আধুনিক ডিজিটাল মাইক্রোমিরর ডিভাইজ নামক একটি মাইক্রোচিপের সমন্বয়ে ডিএলপি মিনি প্রজেক্টর তৈরি করা হয়ে থাকে। এটিকে নতুন প্রজন্মের মিনি প্রজেক্টর বলা হয়। এই প্রজেক্টরের মধ্যে একটি আয়তক্ষেত্রাকার চিপ আছে যা দুই মিলিয়ন মাইক্রোস্কোপিক আয়না দিয়ে গঠিত। এই চিপের মধ্যে বিদ্যমান দুই মিলিয়ন মাইক্রোস্কোপিক আয়না পিক্সেল হিসেবে কাজ করে থাকে। এর মধ্যে পরিচালিত হয় বিভিন্ন রঙের আলো যা রূপ নেয় একটি পরিপূর্ণ ছবি বা ভিডিওতে। এটি যেকোনো ডিভাইস থেকে স্বচ্ছ একটি পর্দায় ছবি বা ভিডিও প্রদর্শন করে থাকে।
৪। প্রথমেই দেখে নিতে হবে মিনি প্রজেক্টরের উজ্জ্বলতা এবং কন্ট্রাস্ট রেশিও কত আছে। একটি প্রজেক্টরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে উজ্জ্বলতা। একটি মিনি প্রজেক্টরের উজ্জ্বলতা যত বেশি হবে তত উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে। তাই আগে প্রোজেক্টরের ব্রাইটনেস কত লুমেন্স এটি জেনে মিনি প্রজেক্টর কিনতে হবে। আবার একটি মিনি প্রোজেক্টরের কন্ট্রাস্ট রেশিও যত বেশি হবে তত পরিষ্কার ছবি বা ভিডিও দেখা যাবে। তাই উজ্জ্বলতার পাশাপাশি কন্ট্রাস্ট রেশিও কেমন সেটি দেখে নিতে হবে।
৫। মিনি প্রজেক্টরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর রেজুলেশন। এই রেজুলেশনের উপর ভিত্তি করে এটি দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বিডিতে বিভিন্ন রেজুলেশনের মিনি প্রজেক্টর পাওয়া যায় সেগুলো হলো, এসভিজিএ (৮০০ x ৬০০), এক্সজিএ (১০২৪ x ৭৬৮), ডব্লিউএক্সজিএ (১২৮০ x ৮০০), এইচডি (১৯২০ x ১০৮০) এবং 4K (৪০৯৬ x ২১৬০) রেজুলেশন। রেজুলেশন বেশি হলে ছবি বা ভিডিও এর মান ভালো হবে। তাই কেনার আগে অবশ্যই রেজুলেশন কেমন এগুলো দেখে কিনতে হবে।
৬। প্রতিটি মিনি প্রজেক্টরেই ল্যাম্প লাইফ নামে একটি বৈশিষ্ট্য থাকে। ল্যাম্প লাইফ বলতে এটি কত ঘন্টা স্থায়িত্ব হবে সেটিকে বোঝানো হয় হয়। মিনি প্রজেক্টরের ল্যাম্প লাইফ যত বেশী হবে তত বেশি এটি চলতে সক্ষম হবে। তাই কেনার আগে অবশ্যই ল্যাম্প লাইফ কত আছে তা জেনে কেনা উচিত।
৭। প্রতিটি মিনি প্রজেক্টর একটি নিদৃস্ট দূরত্ব থেকে প্রদর্শন করতে হয। কিছু কিছু মিনি প্রজেক্টর খুব অল্প দূরত্ব হতে প্রজেক্ট করতে পারে যেগুলোকে শর্টথ্রু মিনি প্রজেক্টর বলা হয়ে থাকে। তাই যে রুমে চালাবেন তার স্পেস অনুযায়ী মিনি প্রজেক্টর নির্ধারণ করুন। বাংলাদেশে সব ধরনের মিনি প্রজেক্টর এখন পাওয়া যায়।
৮। কিছু মিনি প্রজেক্টরে বিল্ট-ইন রিচার্জেবল ব্যাটারি রয়েছে যা খুব কাজের কারন যেখানে বৈদ্যুত নেই সেখানেও ২-৩ ঘন্টা প্রজেকশন করতে পারে।