সাউন্ড বক্স বা স্পিকার এমন একটি ডিভাইস যা অডিও সিস্টেম থেকে শব্দ উৎপাদন করে এবং এমপ্লিফায়ারের মাধ্যমে উচ্চতর শব্দ প্রদান করে। ব্যবহার, আকার এবং সংযোগের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে স্পিকারের কয়েকটি ধরন রয়েছে এবং খুব কম দামে বিডিস্টল এর মাধ্যমে কেনা যাবে।
কি ধরনের স্পিকার কিনতে হবে?
১। বুকসেলফ স্পীকারঃ বুক সেলফ বা পড়ার টেবিলে সাজিয়ে রাখা যায় এই ধরণের স্পীকারকে বুকসেলফ স্পীকার বলে। বুকসেলফ স্পিকার বেশিরভাগ সাধারন অডিওর জন্য ব্যবহৃত হয়।
২। টাওয়ার স্পিকারঃ টাওয়ার স্পিকার যা ফ্লোরস্ট্যান্ডিং স্পিকার হিসাবেও পরিচিত অডিও শোনার জন্য একটি দুর্দান্ত স্পিকার। এই স্পিকারে ৩ ধরণের ফ্রিকোয়েন্সির জন্য ৩ ধরণের আলাদা অ্যামপ্লিফায়ার থাকে। কম ফ্রিকোয়েন্সির জন্য সাবউফার, মাঝারি রেঞ্জের ফ্রিকোয়েন্সির জন্য স্পিকার এবং উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির জন্য একটি টুইটার যুক্ত করা থাকে। যার ফলে এই ধরণের বক্স থেকে ক্লিয়ার আউটপুট পাওয়া যায়।
৩। মাল্টিমিডিয়া স্পিকারঃ সাধারণত কম্পিউটারে যে সকল স্পিকার এমপি৩ অডিও প্লেয়ারের এর জন্য ব্যবহার করা হয় সে সকল স্পিকার হল মাল্টিমিডিয়া স্পিকার। এই ধরনের স্পিকার অ্যাডাপ্টর দিয়ে সরাসরি বিদ্যুৎ চালাতে হয়। এই স্পিকারগুলি ২:১ স্পিকার, ৪ঃ১ স্পিকার, ৫ঃ১ স্পিকার হিসাবেও জানে এবং একটি গভীর সাবউফার সহ ২-৫টি স্যাটেলাইট স্পিকারের সাথে আসে।
৪। টিভি সাউন্ড বক্সঃ সাউন্ড বার স্পিকারটি একটি টিভির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং কখনও কখনও টিভি স্পিকার হিসাবে বলা হয়। টিভির জন্য সাউন্ড বক্স অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। রুমের সাইজের উপরে নির্ভর করে টিভি বক্স নির্বাচন করা উচিৎ।
৫। ডিজে স্পিকারঃ উচ্চ সাউন্ড সিস্টেমের জন্য যে সকল স্পীকার ব্যবহার করা হয় সে সকল স্পীকারকে ডিজে স্পিকার বলে। ডিজে স্পিকার সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ভেন্যুতে, ক্লাবে, বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে।
৬। হোম থিয়েটার স্পিকারঃ হোম থিয়েটার সিস্টেম সাধারনত উচ্চ মানের অডিও প্রদান করে। এগুলোতে ডান এবং বাম ফ্রন্ট স্পিকার, ডান এবং বাম পিছনের স্পিকার, ডলবি শব্দের জন্য উচ্চমানের আরকটি স্পিকার থাকে।
৭। পেশাদার অডিওঃ এটি স্টুডিও-গ্রেড অডিও সরঞ্জাম ব্যবহার করে উচ্চ মানের লাউড অডিও তৈরি করে। এটি সাধারণত স্টেজ প্রোগ্রাম, কনসার্ট, বক্তৃতা এবং অনন্যা বড় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়।
৮। মসজিদ স্পিকারঃ মসজিদের স্পিকারের পরিষ্কার শব্দ এবং প্রাকৃতিক ভয়েস থাকা উচিত যাতে কোনও নয়েজ না হয়।
৯। পোর্টেবল স্পীকারঃ যে সকল স্পিকার ওজনে হালকা ও সহজে যে কোন জায়গায় বহন করা সে সকল স্পিকারকে পোর্টেবল স্পীকার বলে। পোর্টেবল স্পীকারে ব্যাটারি থাকায় যে কোন জায়গায় ব্যবহার করা যায়। যে স্পিকারগুলি কোনও তার ছাড়াই ব্লুটুথের মাধ্যমে ওয়্যারলেস আউটপুট দেয় তাকে পোর্টেবল ব্লুটুথ স্পিকার বলে।
১০। সাবউফারঃ উফার এবং সাব-উফার স্পিকারের একই ধরনের কাজ করে থাকে। সাবউফার সাউন্ড বক্সের ৩০ হার্জ এর নিচের ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করার জন্য এবং উফার সাউন্ড বক্সের ৩০ হার্জের উপরের ফ্রিকোয়েন্সি তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে স্পিকারের দাম কত?
বাংলাদেশে স্পিকারের দাম ৫০০ টাকা থেকে শুরু হয় যা একটি ছোট সাউন্ড বক্স কিন্তু স্পষ্ট অডিও সরবরাহ করে। এই ধরনের স্পিকার বক্তৃতা শোনা এবং অনলাইন ক্লাসের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। বাংলাদেশে একটি কম্পিউটার বক্সের দাম পড়বে কমপক্ষে ২,০০০ টাকা যার মধ্যে একটি উফার এবং দুটি স্যাটেলাইট স্পিকার রয়েছে। এই ধরনের স্পিকার বাংলাদেশে মাল্টিমিডিয়া স্পিকার নামেও পরিচিত। অধিক শব্দের জন্য, দাম সাধারণত তার উফারের আকার, শব্দের গুণমান, ব্র্যান্ড এবং অন্তর্ভুক্ত স্পিকারের সংখ্যার উপর নির্ভর করে।
আর কি চেক করা দরকার?
- আরএমএসঃ আরএমএস যত বেশি হবে তত জোরে শব্দ হবে। তাই যদি একাধিক লোককে শোনানোর প্রয়োজন হয় তবে অধিক আরএমএস প্রয়োজন। সুতরাং, ঘরের আকার বিবেচনা করা এবং কতটা আরএমএস আপনার জন্য ভাল হবে বিবেচনা করে তা নির্ধারণ করা ভাল।
- ফ্রিকোয়েন্সি প্রতিক্রিয়াঃ এটিকে হার্টজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। একজন মানুষ ২০ হার্টজ থেকে ২০ কিলোহার্টজ শুনতে পারে তাই ফ্রিকোয়েন্সি সবচেয়ে কাছের হিসেবে বেছে নেওয়া ভালো। যাইহোক, স্পিকার কেনার জন্য ফ্রিকোয়েন্সির কোন নির্ধারিত মাপ নেই।
- প্রতিবন্ধকতাঃ প্রতিবন্ধকতা ওহমস দ্বারা পরিমাপ করা হয়। বেশিরভাগ স্পিকারের ৪-ওহমস প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যা হোম অডিওর জন্য যথেষ্ট। যাইহোক, নিশ্চিত করুন যে আপনার বেছে নেওয়া সমস্ত স্পিকারে একই ওহমস আছে।
- সংবেদনশীলতাঃ সংবেদনশীলতা যত বেশি হবে তত ভাল কারণ এটি উচ্চ মানের শব্দ করতে কম শক্তি নিবে। সংবেদনশীলতা ডেসিবেলে পরিমাপ করা হয়। সংবেদনশীলতার পরিসীমা ৮৮ ডেসিবেল থেকে ১০০ ডেসিবেল।
- স্পিকারের সংখ্যাঃ আপনার কয়টি স্পিকার প্রয়োজন তা নির্ধারণ করুন কারন এত উপর দাম নির্ভর করবে। আপনি যদি একটি বড় জায়গা কভার করতে চান তবে একাধিক স্পিকার সবচেয়ে ভাল কাজ করবে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য একক বা ডবল স্পিকার চলবে। বাংলাদেশের বাজারে স্পিকার সাধারণত সিঙ্গেল বা ডাবল স্পিকার এবং ২:১, ৩:১, ৪:১, ৫:১, ৭:১ ইত্যাদি দ্বারা বিক্রি হয় যার অর্থ উল্লেখিত স্পিকারের সংখ্যার সাথে ১টি সাবউফার অন্তর্ভুক্ত করা আছে।
- সংযোগঃ বেশিরভাগ স্পিকারের তারযুক্ত সংযোগ রয়েছে তবে কিছু স্পিকার অডিও সিস্টেমের সাথে ব্লুটুথ সংযোগ সমর্থন করে। তাই কেনার আগে নিন।