bdstall.com

পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতু হলো বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু  যার মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সাথে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সংযোগ ঘটবে । সেতুটির উত্তর পাড় মুন্সীগঞ্জ, মাওয়া পয়েন্টে অবস্থিত এবং দক্ষিণ পাড় শরীয়তপুর এবং মাদারীপুর, জাজিরা পয়েন্টে অবস্থিত । সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ৬,১৫০ মিটার বা ২০,১৮০ ফুট এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার বা ৫৯.৪ ফুট। এটির সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন হলে এটিই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেতু।

 

পদ্মা সেতু প্রকল্প


২০০৭ সালের ২৮ই আগস্ট সর্বপ্রথম বাংলাদেশের সাবেক তত্বাবদায়ক সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রকল্প পাশ করেছিলেন । যার নিমার্ণ কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১১সালে এবং তা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু পরবর্তীতে দেশের সরকার পরিবর্তন হওয়ায় নতুন সরকার এসে সেতুতে রেল পথ সংযুক্ত করেন এবং প্রথম বারের মত ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি সেতুর ব্যয় সংশোধন করেন । তত্বাবদায়ক সরকার সেতুর ব্যয় ধরেছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এসে সেখানে রেলপথ সংযুক্ত করায় তা বেড়ে দাড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা  এবং পরবর্তীতে পদ্মা সেতুর ব্যয় আরো ৮ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয় এবং সবশেষে তার মোট ব্যয় দাড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এবং ২০১৪ সালের ৭ইং ডিসেম্বর চুড়ান্ত ভাবে পদ্মা সেতুর কাজ আরম্ভ হয় এবং তা শেষ হওয়া কথা রয়েছে ২০২১ সালে। ২০২১ সালেই সেতুটি চলাচলের উপযুক্ত হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সরকারের পরিকল্পনামাফিক ২০২১ সালেই সেতুটি চলাচলে জন্য উদ্বোধন করা হবে।

 

নকশা চুক্তিবদ্ধ সংস্থা


AECOM এর ডিজাইনে পদ্মা নদীর উপর বহুমুখী আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প ”পদ্মা বহুমুখী সেতুর” নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ নকশা তৈরি করেন AECOM এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও দেশের জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল। 

সেতুটি তৈরির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড এর আওতাধীন চায়না ”মেজর ব্রীজ” নামক একটি কোম্পানী। কাজ শুরু হয় ৭ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে। এতে মোট ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ।

 

অর্থায়ান


শুরুতে বিশ্বব্যাংক প্রল্পটির জন্য অর্থসহায়তার আগ্রহ দেখালেও প্রকল্প প্রস্তুতির সাথে যুক্ত কিছু লোকের দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় বিশ্বব্যাংক তার প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করে নেয় এবং অন্যান্য দাতারাও সেটি অনুসরণ করে। তবে পরবর্তীতে সেই দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রামাণিত হয় এবং কোন প্রমাণ না পাওয়ায় আদালত এই দুর্নীতির মামলাতি বাতিল করে দেয়। তবে বর্তমানে সম্পূর্ণ ”পদ্মা বহুমুখী সেতুর” প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে।

 

পদ্মা সেতুর প্রয়োজনীয়তা


পদ্মা সেতুটির ফলে দেশের কেন্দ্র বা ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সরাসরি সংযোগ তৈরি হবে। আর বর্তমানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশটি তুনলামূলক কিছুটা অনুন্নত। আর এই পদ্মা সেতুটি বাস্তবায়িত হলে দেশের এই অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে । প্রকল্পটির ফলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় ৪৪,০০০ বর্গ কিঃমিঃ (১৭,০০০ বর্গ মাইল) বা বাংলাদেশের মোট এলাকার ২৯% অঞ্চলজুড়ে ৩ কোটিরও অধিক জনগণ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে। দেশ হয়ে উঠবে আরো গতিশীল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের যোগাযোগ ঘটবে এক বিপ্লব। এছাড়াও প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে ভবিষ্যতে রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সম্প্রসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে দেশের জিডিপি ১.২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট 

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: March 17, 2020
Reviews (0) Write a Review