.

বর্তমানে, প্রত্যেকটি মানুষের কাছে একটি ই-পাসপোর্ট থাকা অপরিহার্য। এই আধুনিক বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট কেবল মেশিন-রিডেবল নয় বরং আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন। আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য বিদেশ ভ্রমণের পরিকল্পনা করেন - বিশেষ করে পড়াশোনা, চাকরী বা ব্যবসার জন্য - তাহলে অবশ্যই ১০ বছরের ই-পাসপোর্ট নেওয়া উত্তম।
তবে, অনেকেই ১০ বছরের ই-পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেন না। তাহলে, চলুন কিভাবে ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে পারবেন তা ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক।
১০ বছর মেয়াদী ই-পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
১। জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
নিশ্চিত করুন যে আপনার NID আপডেটেড এবং সঠিক। যদি কোনও অমিল থাকে, তাহলে আপনার আবেদন বাতিল করা হতে পারে।
২। জন্ম সনদ (যদি আপনার NID না থাকে)
আপনার বয়স ১৮ বছরের কম হলে, আপনাকে একটি জন্ম সনদ প্রদান করতে হবে।
৩। বাসস্থান বা ঠিকানার প্রমাণ (যদি আপনার ঠিকানা পরিবর্তিত হয়)
এটি বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, অথবা একটি উইথহোল্ডিং ট্যাক্স রসিদ হতে পারে।
৪। পুরাতন পাসপোর্ট (যদি আপনার থাকে)
যদি আপনার পূর্ববর্তী মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) থাকে, তাহলে তা সাথে আনতে ভুলবেন না।
৫। পাসপোর্ট সাইজের ছবি
যদিও আপনার ছবি ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে তোলা হবে, তবে সাম্প্রতিক ছবি হাতে রাখা ভালো।
৬। পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে?
১০ বছরের ই-পাসপোর্টের খরচ মূলত আপনার কত দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজন তার উপর নির্ভর করে। ফি এর পরিমান সমূহ হচ্ছে
- সাধারণ ২১ কার্যদিবস - ৳৬,৯০০
- অগ্রাধিকার ১০ কার্যদিবস - ৳৮,০৫০
- জুরুরি ২-৩ কার্যদিবস - ৳৯,২০০
বিঃদ্রঃ আপনি যদি অনলাইনে ফি প্রদান করেন, তাহলে অতিরিক্ত সেবা চার্জ লাগতে পারে।
কিভাবে আবেদন করবেন?
- স্টেপ ১ঃ অনলাইন নিবন্ধন
- স্টেপ ২ঃ আবেদনপত্র পূরণ
- আপনার ব্যক্তিগত বিবরণ, আপনার বর্তমান ঠিকানা এবং আপনি ১০ বছরের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করছেন তা উল্লেখ করতে হবে।
- স্টেপ ৩ঃ অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন
- নির্ধারিত পাসপোর্ট অফিসে আপনার ছবি তোলা এবং বায়োমেট্রিক্স সংগ্রহের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করে নিবেন।
- স্টেপ ৪ঃ নথি এবং ফি জমা দিন
- আপনার প্রিন্ট করা আবেদনপত্র, প্রয়োজনীয় নথি এবং আপনার ব্যাংক রসিদের কপি নিয়ে অফিসে আসবেন, যেখানে আপনার বায়োমেট্রিক্স এবং ছবিও তোলা হবে।
- স্টেপ ৫ঃ পাসপোর্ট সংগ্রহ
- নির্ধারিত দিনে, একটি এসএমএস বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর আপনি সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে আপনার পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।
- স্টেপ ৬ঃ পাসপোর্ট সংশোধন
- ই-পাসপোর্টে তথ্যের ভুল সংশোধন করতে, আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে, পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে "রিনিউ" বা "সংশোধন" অপশন নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রমাণাদি আপলোড করতে হবে। এছাড়াও, যদি আপনি কোনো ব্যক্তিগত তথ্য (যেমন নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ) সংশোধন করতে চান, তাহলে একটি নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে তার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
অতিরিক্ত কিছু টিপস
- তথ্য ভুল থাকলে পাসপোর্ট বাতিল বা বিলম্ব হতে পারে, তাই সাবধানে ফর্ম পূরণ করবেন।
- যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারবেন।
- আপনার যদি জরুরি প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বা অতি জরুরি সেবা বেছে নিতে পারেন।
- যারা বিদেশে বসবাস করেন, তারা সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন।
তবে, নির্দিষ্ট সময় পর পাসপোর্ট করার নিয়মাবলী পরিবর্তন হতে পারে। তাই, উপরোক্ত তথ্য সমূহ অনুসরণ করার পাশাপাশি আপডেট তথ্য পেতে ডিপার্টমেন্ট অফ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন।
এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: August 18, 2025