ব্লেন্ডার সকলের একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। পৃথিবীতে ব্লেন্ডার ব্যবহার করে না এমন দেশ নেই বললেই চলে। বাংলাদেশে রয়েছে ব্লেন্ডার মেশিনের ব্যাপক চাহিদা। ব্লেন্ডার মেশিন রান্নার অনেক কাজকে সহজ করে দেয় এবং সময় কম খরচ করে। এটির সাহায্যে বিভিন্ন পানীয় তৈরী, মাংশ কুচি করা, চাল গুঁড়ো করা, মসলা পেষা ছাড়াও অনেক কাজ করা যায়। এটিকে অনেকে গ্রিন্ডার মেশিনও বলে।
বাংলাদেশে ব্লেন্ডার মেশিনের দাম কত?
বাংলাদশে ব্লেন্ডার মেশিনের দাম ১,০০০ টাকা থেকে শুরু যেগুলোর সাথে জুস জার এবং গ্রিন্ডার জার রয়েছে। তবে ব্লেন্ডার মেশিনের দাম নির্ভর করে এর ব্র্যান্ড, পাওয়ার এবং বিভিন্ন এক্সেসরিসের উপর।
বাংলাদেশে হ্যান্ড ব্লেন্ডার মেশিনের দাম কত?
হ্যান্ড ব্লেন্ডার মেশিন ৫০০ টাকায় যায় যেটি মূলত কোন কিছু ভালভাবে মিক্স করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলোকে বাংলাদেশে বিটার মেশিনও বলা হয়।
মিনি ব্লেন্ডার দিয়ে কি সব কাজ করা যায় এবং দাম কত?
মিনি ব্লেন্ডার দিয়ে সব কাজ করা যায় তবে এগুলোতে একটি মাত্র জার থাকে। বাংলাদেশে এই মিনি ব্লেন্ডারগুলোর দাম ৮০০ টাকার ভিতর।
ব্লেন্ডার কেনার আগে আর কি টিপস জানতে হবে?
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্লেন্ডার মেশিন পাওয়া যায়। এই ব্লেন্ডার মেশিন গুলো একেকটি একেক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। ব্লেন্ডার বা গ্রিন্ডারের কিছু বিশেষত্ব আছে। বিশেষত্ব অনুযায়ী যেভাবে সঠিক ব্লেন্ডার মেশিন নির্বাচন করা যায় তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
১। বাংলাদেশের বাজারে অসংখ্য প্লাস্টিকের ব্লেন্ডার পাওয়া যায়। প্লাস্টিকের এই ব্লেন্ডার গুলো ব্যবহার করা হয় শরবত বানানোর কাজে। এই মেশিন গুলোর সাহায্যে বাহারি রকম ফলের জুস বানানো যায়। এই প্লাস্টিকের ব্লেন্ডার গুলোতে পরিমাণ মতো ফল এবং পরিমাণ মতো পানি নিয়ে কয়েক সেকেন্ডেই তৈরি করা যায় মজাদার জুস। তাই কেনার আগে এর প্লাস্টিকের মান কেমন এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কেনা উচিত। এটি অবশই ফুড গ্রেডের হওয়া উচিত।
২। বাংলাদেশে অনেক স্টেইনলেস স্টীলের ব্লেন্ডার বা গ্রিন্ডার মেশিন পাওয়া যায়। এগুলোর সাহায্যে মাংশ কাটা, চাল-ডাল গুঁড়ো, মসলা পেষা ছাড়াও অনেক কাজ করা যায়। স্টেইনলেস স্টীলের মান ভাল হতে হবে তা না হলে কম টেকসই হবে।
৩। ব্লেন্ডার মেশিনের বোতাম গুলোর কাজ সম্পর্কে জানতে হবে। ব্লেন্ডারমেশিনের সকল বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এর মাঝে থাকা বোতাম। বিভিন্ন বোতাম ব্লেন্ডার বা গ্রিন্ডার মেশিনের গতি, শক্তি আরও বিভিন্ন জিনিস নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হয় তাই কেনার আগে এর বোতাম গুলোর কাজ সম্পর্কে জেনে নিতে হবে ভালো ভাবে।
৪। কিছু কিছু মেশিন আছে যেগুলো একটু ব্যতিক্রম। এরা মিক্সার অথবা বিটার নামেও পরিচিত। এই মেশিন গুলোর সাহায্যে আটা, ডিম-দুধ এবং বিভিন্ন জিনিস মিক্স করা যায়। তাই এইসকল জিনিস গোলানোর জন্য মিক্সার অথবা বিটার মেশিন কেনা ভালো।
ব্লেন্ডার মেশিন বা গ্রিন্ডার মেশিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
ব্লেন্ডার মেশিন বা গ্রিন্ডার মেশিন অনেকেই ব্যবহার করলেও সঠিক ভাবে ব্যবহার করার নিয়ম না জানার কারণে মেশিন টেকসই হয় না। কেনার কয়েকদিন পরেই দেখা দেয় বিভিন্ন সমস্যা। অনেকেই মনে করে থাকে মেশিন কেনার কয়েকদিনের মাথায় মটরে কোনো সমস্যা হয়েছে অথবা অন্য কোনো সমস্যা হয়েছে। আসলে এই ধারণা সঠিক নয়, ব্যবহারে যত্নশীল না হলে মেশিনের ক্ষতি হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই ব্লেন্ডার বা গ্রিন্ডার মেশিন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম গুলো নিচে আলোকপাত করা হলোঃ
১। ব্লেন্ডার বা গ্রিন্ডার মেশিন ব্যবহারের আগে এবং পরে অবশ্যই ভালো ভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে যাতে ভিতরে কোনো গন্ধ না থাকে। বিভিন্ন রাসায়নিক এবং ধুলিকণা জমে মেশিনের ব্লেডকে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফলে ব্লেডের ধার কমে যায়। ফলে কোনো কিছু গ্রিন্ড অথবা ব্লেন্ড করতে অনেক সমস্যায় পরতে হয়। তাই ব্যবহারের আগে ও পরে ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
২। ব্লেন্ডার অথবা গ্রিন্ডার ব্যহারের সময় অবশ্যই ঢাকনা ভালো ভাবে লাগানো হয়েছে কিনা তা লক্ষ্য করতে হবে। ঢাকনা ঠিক মতো না লাগানো হলে ব্লেন্ড বা গ্রিন্ড করার সময়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই ঢাকনা ঠিক মতো আছে নাকি প্রয়োজনে একাধিকবার দেখে নিতে হবে।
৩। সঠিক ভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ না হওয়ার ফলে হতে পারে শক সার্কিটের মতো বড় ধরণের ক্ষতি। শক সার্কিট না হলেও মেশিনের অনেক রকম ক্ষতি হতে পারে। তাই বৈদ্যুতিক সংযোগ ঢিলা আছে কিনা দেখে নিতে হবে। ঢিলা থাকলে অবশ্যই সঠিক ভাবে লাগিয়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হবে।
৪। ব্লেন্ড বা গ্রিন্ড করার সময়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ অবশ্যই ছোট ছোট পিছ করে কেটে নিতে হবে। কেননা ছোট করে না কাটলে মেশিনের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি হয়। আর এই চাপের কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই মেশিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৫। ব্লেন্ডারের গতি কখনোই সর্বোচ্চ করা ঠিক নয়। এর ফলে মেশিন অনেক গরম হয়ে যায় তাড়াতাড়ি এবং কয়েকদিনের মাঝেই মটর অকেজ হয়ে যেতে পারে। তাই ব্যবহারের সময় সর্বোচ্চ গতি থেকে একটু কমিয়ে রাখা ভালো।
৬। মটরকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে ১-২ মিনিটের বেশি কোনো ভাবেই ব্লেন্ডারকে চালানো যাবে না। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ব্লেন্ডার চালালে এটির মটর একটা সময়ে ধীর গতিতে কাজ করবে। তাই গ্রিন্ডার অথবা ব্লেন্ডার মেশিন ব্যবহারের সময় ১-২ মিনিট এর মাঝে থাকাই উত্তম।