ডেস্কটপ পিসি হল একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার যা প্রতিদিনের কাজের জন্য একটি মাত্র নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে ব্যবহার করা যায়। ডেস্কটপ পিসি বলতে সাধারনত বোঝায় মনিটর, কিবোর্ড, মাউস এবং একটি সিপিইউ এর সমন্বয় । যা দিয়ে সকল প্রকার কাজ করা সম্ভব হয়। এখন বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের ডেস্কটপ পিসি রয়েছে বিভিন্ন ফাংশন এবং দামের রেঞ্জের উপর ভিত্তি করে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কোন কাজের জন্য কোন ধরনের ডেস্কটপ পিসি। এছাড়াও, আপনি একটি সম্পূর্ণ ডেস্কটপ পিসির দাম কনফিগার করতে এবং অনুমান করতে পিসি বিল্ডার ব্যবহার করতে পারেন।
অনলাইন ক্লাসের জন্য কম দামের পিসি কোনটি?
করোনার (কোভিড-১৯) সংক্রমণ এড়াতে ইন্টারনেটনির্ভর পড়াশোনা বেড়েছে। অনলাইনভিত্তিক পড়াশোনায় কাঙ্ক্ষিত ডিভাইস যেমন ডেস্কটপ পিসি বেশি প্রয়োজন কারন এটা নিজের বাজেট অনুযায়ী তৈরি করে নেওয়া যায়। শিক্ষার্থীদের বই ইনস্টল কিংবা ডাউনলোড করার বিষয় থাকে সেজন্য অন্তত ৫০০ জিবির হার্ডডিস্ক ও ৪ জিবি র্যাম হলে ভালো হয়। সাথে ১৯ ইঞ্চির একটি মনিটর হলে ভাল হয়। অনলাইন ক্লাসের জন্য সর্বনিম্ন বাজেট হতে হবে ১০,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা।
আউটসোর্সিং পিসির জন্য কনফিগারেশনটি কী হওয়া উচিত?
আউটসোর্সিং করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কম খরচে একটি ভালো মানের পিসি। আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী কোর আই-৩ বা কোর আই-৫ এর পিসি নিতে পারেন। যদি কোর আই নেন তাহলে সাথে এসএসডি নিবেন কারণ ভাল পারফরমেন্স পাবেন।
কোন ধরণের পিসি গ্রাফিক্স সফটওয়্যার চালাতে পারে?
গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করার জন্য দরকার শক্তিশালী একটা ডেস্কটপ পিসি। এজন্য উন্নত মানের প্রসেসর যেমন ইন্টেল কোর আই-৫ অথবা আই-৭ হলে ভালো হয়। র্যাম যত বেশি হবে কাজের প্রসেসিং তত বেশি হবে তাই প্রসেসরের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সর্বনিম্ন ৮ জিবি র্যাম ব্যবহার করা ভালো হবে। গ্রাফিক ডিজাইন এ ফটোশপ অনেক জনপ্রিয় একটা সফটওয়্যার আর ফটোশপ চালাতে মেমরি বেশি প্রয়োজন হয়। ২১-২৪ ইঞ্চির মনিটর মিনিমাম ১৯২০ x ১২০০ পিক্সেল ডাইমেনশন হলে ভালো হয়। সাথে পিসিকে আরও দ্রুত কাজ করাতে ১২৮ জিবি এসএসডি নিতে পারেন অপারেটিং সিস্টেমের জন্য তাহলে পিসি অনেক দ্রুত চলবে।
ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের জন্য কি কোনও বিশেষ পিসি প্রয়োজন?
ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের জন্য অনেক স্যফটওয়্যারের প্রয়োজন হয় । এর জন্য উচ্চ কনফিগারেশনের পিসির প্রয়োজন পড়ে। এছাড়াও মধ্যম পর্যায়ের পিসি দিয়ে কাজ করা সম্ভব তবে এর সাথে অবশ্যই শক্তিশালী প্রসেসর ও মাদারবোর্ড থাকতে হবে।
সর্বশেষ গেমস খেলার জন্য সেরা পিসি কোনটি?
সাম্প্রতিক গেমগুলো খেলতে উচ্চ ক্ষমতার পিসির প্রয়োজন যাতে অনেক ভাল রেসপন্স পাওয়া যায়। ৪জিবি বা আরও অধিক মানের গ্রাফিক্স কার্ডের সাথে সর্বশেষ প্রযুক্তির কোর আই-৭ প্রয়োজন। হাইব্রিড স্ট্রোরেজ সুবিধা দিবে তাই ২৫৬ জিবি এসএসডি এবং ৪ টিবি হার্ডডিস্কের সংমিশ্রণটি আপনার পিসি কর্মক্ষমতা অনেক বাড়াবে। গেমিং মাদারবোর্ড, অতিরিক্ত সিপিইউ কুলার, মেমরি কুলার, গেমিং পাওয়ার ইউনিট সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য প্রয়োজন হতে পারে।
পিসি কিনতে বাজেট কী হওয়া উচিৎ?
বাংলাদেশে ডেস্কটপ পিসির দাম ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু যেটি দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, অডিও ও ভিডিও, লেখা সম্পাদনা এবং অনুরূপ কাজের মতো মৌলিক কম্পিউটিংয়ের জন্য ভাল। তবে আপনি যদি পেশাদার হন তাহলে পিসির দাম একটু বেশি হবে যেমন ২০,০০০ টাকা বা তার বেশি সেক্ষেত্রে আপনি দেশের বাজার থেকে একটি ভাল মানের ডেস্কটপ পিসি কিনতে পারবেন। কিছু পিসি আরও কম দামে পাওয়া যায় যদি শুধু সিপিউ কেনা হয়। চলুন বাজেট অনুযায়ী কিছু পিসি কনফিগারেশন দেখি তাতে একটি ভাল ধারনা পাওয়া যাবে আর বাংলাদেশের মার্কেটে দামের অনুপাতে কিছু কম বা বেশি হতে পারে।
৭০০০ থেকে ১০,০০০ টাকাঃ ডুয়েল কোর বা কোর আই-৩ পিসি পাওয়া যাবে। সাথে ৪ জিবি র্যাম, বিল্ট-ইন গ্রাফিক্স কার্ড, সাধারণ মনিটর। এই বাজেটের পিসিগুলো সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বিধায় ছাত্রদের জন্য আদর্শ এবং সহজে অনলাইন ক্লাস করতে পারা যাবে।
২০,০০০ হাজার টাকাঃ এ দামের মধ্যে পিসি কিনলে প্রসেসর ইন্টেলের কোর আই-৫ এর সাথে সর্বোচ্চ ৫ জেনারেশন পাওয়া যাবে । যা দিয়ে আফিসের কাজগুলো দ্রুত ও খুব সহজেই করতে পারবেন। সাথে সাধারণ আউটসোর্সিং এর যেকোন কাজ করা যাবে।
৩০,০০০ টাকাঃ এই বাজেটে ডেস্কটপ পিসি কিনলে ভালো মানের একটি ডেস্কটপ পিসি পাওয়া যাবে। এর সাথে অষ্টম জেনারেশন ইন্টেলের কোর আই৫ ও কোর আই৭ পাওয়া যাবে যা দিয়ে যে কোন কাজ অনায়াশে করা যাবে। ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের জন্য এই ধরনের পিসি ভাল কাজ করবে।
৪০,০০০ টাকাঃ উচ্চ কনফিগারেশনের ডেস্কটপ পিসি পাওয়া যাবে। এটি দিয়ে যে কোন জটিল কাজ খুব সহজেই করা যাবে। এতে লেটেস্ট ভার্শনের প্রসেসর ও হার্ডডিস্ক যুক্ত থাকবে। প্রোগ্রামিং এবং গ্রাফিক্সের কাজ করার জন্য এই বাজেটের পিসি কেনা দরকার।
পিসির জন্য কোন সিপিইউ বেছে নেবেন?
এটি কাজের ধরন এবং সিপিইউ এর বর্তমান দামের উপর নির্ভর করে। কোর আই-৩ পিসি বাজেট ক্রেতাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। কোর আই-৫ পিসি বেশিরভাগ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ভাল কর্মক্ষমতা প্রদান করে। কোর আই-৭ পিসি উচ্চ পারফরমেন্সের জন্য আদর্শ।