bdstall.com

ফটোকপি মেশিন কেনার টিপস

ফটোকপিয়ারের ব্যবস্যা একটি অতি লাভজনক ব্যবসা। অল্প পুজি ব্যবসার কাজে লাগিয়ে সহজেই স্বাবলম্বী হওয়া যায়। তাছাড়া যে অফিসে ফটোকপি বেশি করতে হয় সেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ কপিয়ার অধিক প্রয়োজন। তাই ব্যবসা বা কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে সঠিক ফটোকপি মেশিন নির্বাচন করা জরুরী। আজকে আমরা ফটোকপি মেশিন কেনার টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

 

প্রতি মাসে কি পরিমানে কপি করার প্রয়োজন হবে

ফটোকপি মেশিন কেনার আগে প্রথমে লক্ষ্য স্থির করতে হবে যে আপনার প্রতি মাসে কত পরিমানে পৃষ্ঠা কপি করতে হবে। কারণ সকল মেশিনের ক্যাপাসিটি সমান থাকে না। যেমন যদি সাধারণ অফিসের জন্য বা ছোট ব্যবসায় এর জন্য ব্যবহার করতে চান তাহলে  এর জন্য তোশিবা ই-স্টুডিও ২৫২৩এ মডেলটিই যথেষ্ট হবে। এবং অধিক পৃষ্ঠা কপি করতে হলে তোশিবা ইস্টুডিও ২৬১৮ মডেলটি ব্যবহার করা ভাল হবে।  

 

বাজেট

আপনার সর্বোচ্চ বাজেট নিরধারন করুন। সব ফিচার আপনার প্রয়োজন নাও হতে পারে। আবার কিছু ফিচার ভবিশ্যতে প্রয়োজন হতে পারে। বাংলাদেশের বাজারে এখন কপিয়ার অনেক কম দামে পাওয়া যায়। কপিয়ার কেনার আগে বাংলাদেশে ফটোকপি মেশিনের দাম জেনে তুলনামুলক একটি ধারনা নিন।

 

সাদা-কালো নাকি রঙ্গিন

সকল ফটোকপিয়ারের মধ্যে সব ধরনের ফিচার থাকে না। বর্তমান সময়ে দুই ধরনের ফটোকপি মেশিন বাজারে দেখতে পাওয়া যায়। একরঙা ফটোকপিয়ার দিয়ে, শুধুমাত্র কালো এবং সাদা পৃষ্ঠাগুলি কপি করা যায়। এবং অন্য ফটোকপিয়ারের সাহায্য রঙ্গিন পেজ কপি-প্রিন্ট করা যায়। সাদা কালো কপিয়ারের দাম তুলনামূলক অনেক কম থাকে এবং কালার কপিয়ারের দাম অন্যান্য কপিয়ারের তুলনায় বেশি হয়। একটি রঙ্গিন ফটোকপি মেশিন দিয়ে সাদা কালো ও রঙ্গিন দুই ধরনের পেজ প্রিন্ট করা যায়। এটি কালার কপিয়ারের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য।

 

মাল্টি কার্যকারিতা

ফটোকপি মেশিন দিয়ে সুধু কপি নয় এর বিভিন্ন ধরনের ফাংশান কাজের গতি যেমন বাড়াবে তেমনি সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করবে। কপিয়ারের কাজের ধরনের উপরে ৩ টি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হয় এর সিঙ্গেল পেজ প্রিন্ট, ডুপ্লেক্স প্রিন্ট ও মাল্টি ফাংশনাল প্রিন্ট সিস্টেম। এই সকল বিষয়ের কার্যকারিতা ভিন্ন। সিংগেল পেজ কপিয়ার শুধুমাত্র পেজের একপার্শ্বে প্রিন্ট করতে সক্ষম। ডুপ্লেক্স কপিয়ার দিয়ে কাগজের দুই পার্শ্বে একসাথে প্রিন্ট করা যায় ফলে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক কপি করা সম্ভব হয়। তাছাড়া অনেক কপিয়ার দিয়ে কপি করার পাশাপাশি প্রিন্ট বা ফ্যাক্স করার সুবিধা থাকে।    

 

ওয়ার্ম আপ টাইম

ওয়ার্ম আপ টাইম হচ্ছে একটি বন্ধ থাকা কপিয়ারকে চালু করার সময় কাজের জন্য উপযোগী করতে যে সময় লাগে সেটাই হচ্ছে ঐ ডিভাইসের ওয়ার্ম আপ টাইম। একটি মেশিনকে সাড়া দিন চালু রাখা সম্ভব হয় না কাজের প্রয়জনে এটিকে চালু করতে হয়। চালু করার পর ডিভাইসটি নিজেকে কাজের প্রস্তুত করতে কয়েক সেকেন্ড সময় লাগে। বেশিরভাগ তোশিবা ফটোকপি মেশিনের ওয়ার্ম আপ টাইম ২০ সেকেন্ডের মতো হয়ে থাকে।

 

ডিউটি সাইকেল

কপিয়ায়ের ডিউটি সাইকেল হচ্ছে যে একটি কপিয়ার একদিনে, বা এক মাসে বা ১ বছরে কি পরমাণে পেজ প্রিন্ট করতে পারবে তার একককে বুঝায়। ধরা যাক, তোশিবা ২৫২৩এ ফটোকপি মেশিন দিয়ে একদিনে সর্বোচ্চ ১৫০০-১৬০০ পেজ এবং এক মাসে সর্বোচ্চ ৫০০০০ পেজ প্রিন্ট করা যাবে। তাহলে তোশিবা ২৫২৩এ ফটোকপিয়ারের একদিনের ডিউটি সাইকেল হচ্ছে ১৬০০ পেজ। ফটোকপি মেশিন ভেদে এর ডিউটি সাইকেল কম বা বেশি হতে পারে। কাজের পরিধির উপরে ফটোকপি মেশিন নির্বাচন করা ভালো। 

          

কপিয়ারের প্রিন্ট করার গতি

ফটোকপি মেশিনের আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ দিক হচ্ছে পেজ প্রিন্ট করার গতি বা ক্ষমতা। প্রত্যেক কপিয়ারের প্রিন্ট স্পীড সমান হয় না। সাদাকালো ফটকপিয়ারের পেজ প্রিন্ট করার ক্ষমতা বেশি থাকে এবং রঙ্গিন কপিয়ারের প্রিন্ট করার ক্ষমতা কম থাকে। সাধারনত সাদা-কালো কপিয়ার প্রতি মিনিটে প্রায় ২৫ পেজ কপি করতে পারে আর কালার কপিয়ার প্রতি মিনিটে ২০ পেজ কপি করতে পারে।

 

কাগজ প্রিন্ট সাইজ

কাজের ধরন অনুযায়ী ফটোকপি মেশিনে প্রিন্ট করার অনেক ধরনের কাগজের প্রয়োজন পড়ে। প্রত্যেক কাগজের সাইজ এক হয় না। বর্তমান বাজারে এ-৩, এ-৪, খাম তৈরি এবং আইডি কার্ড তৈরির জন্য  কাগজের আকার পাওয়া যায়। সকল ধরনের কাগজ সব ধরনের কপিয়ার প্রিন্ট করতে পারে না। কাগজের আকার প্রিন্টিং এর উপরে নির্ভর করে কপিয়ার মেশিন ভিন্ন হয়ে থাকে। কেনার আগে কাজের ধরন বিবেচনায় রেখে মেশিন কিনতে হবে।

 

পেপার ট্রে

প্রত্যেক ফটোকপি মেশিনের সাথে প্রিন্টিং কাগজের জন্য ট্রে থাকে। যেখান থেকে কপিয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাগজ সংগ্রহ করে প্রিন্ট করতে পারে। বর্তমান বাজারে যে সকল ফটোকপি মেশিন পাওয়া যায় তার মধ্যে সর্বনিম্ন ১টি এবং সর্বোচ্চ ৩টি পেপার ট্রে থাকে। যে মেশিনের কার্যক্ষমতা যত বেশি থাকে তার সে মেশিনের কাগজ রাখার জন্য জায়গা তত বেশি হয় অর্থাৎ পেপার ট্রে বেশি থাকে।

 

কালির খরচ

কপিয়ার কেনার আগে এটির টোনারের দাম কত ভালভাবে জেনে নিন। তাছাড়া অন্যান্য সামঞ্জস্যপূর্ণ টোনার কাজ করবে কিনা জেনে  নিন। আর প্রতি পেজে কালির খরচ কত হতে পারে ধারনা নিয়ে নিন। তবে এটি বাজারে কপিয়ারের টোনারের দাম এর উপর নির্ভর করে।

 

ব্রান্ড সিলেকসান

বাজারের বিভিন্ন ব্রান্ডের কপিয়ার পাওয়া যায়। তবে তোশিবা জাপানি কোম্পানি বলে এর জনপ্রিয়তা অনেক আর দামেও অনেক কম। তাছাড়া অন্যান্য ব্রান্ডের মধ্যে শার্প, রিকো, কায়োসেরা, ক্যানন, কনিকা মিনোল্টা বাজারে পাওয়া যায়।

 

উপরে ফটকপিয়ারের যে সকল বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে সে সকল বিষয় জানা থাকলে কাজের ধরনের উপরে একটি ভালো মানের ফটোকপি মেশিন কিনতে সাহায্য করবে।

এই প্রবন্ধটি পোস্ট করা হয়েছে: April 07, 2022
Reviews (0) Write a Review