সঠিক মাপের এসি বেছে নিলে বিদ্যুৎ বিল কমানোর পাশাপাশি অর্থ সাশ্রয়ও নিশ্চিত হবে।
এসি টন গণনা করার পরে, বাংলাদেশে এসির মূল্য তালিকা দেখুন এবং বিডিস্টল থেকে কিনুন।
Read more
বাংলাদেশে যেকোনো স্থানে প্রচণ্ড তাপ এবং আর্দ্রতায় অসহনীয় অবস্থা থেকে বাঁচতে এসি ব্যবহার কেবল বিলাসিতা নয়, প্রয়োজনীয়তা। ফলে সারাদেশে বাসা-বাড়ি, অফিস এবং সর্বজনীন স্থানগুলোতে দমবন্ধ করা গরম থেকে বাঁচতে সর্বত্রই এয়ার কন্ডিশনার ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাছাড়া এসি সাধারন মানুষের জীবনযাপন, কাজ এবং বিশ্রামের উপায়কে বদলে দিয়েছে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন এবং শক্তি দক্ষতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে বাংলাদেশে প্রাপ্ত এয়ার কন্ডিশনারে নতুন প্রযুক্তির যুক্ত করার ফলে আরও টেকসই এবং সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাচ্ছে।
উইন্ডো এসি কি সাশ্রয়ী?
উইন্ডো এয়ার কন্ডিশনার ছোট বাড়ি বা অফিসের জন্য ব্যবহৃত হয়। উইন্ডো এসিতে কমপ্রেসর এবং ইভাপোরেটর এক ইউনিটে থাকে। উইন্ডো এসি তুলনামূলভাবে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। তবে, উইন্ডো এসি ইন্সটলেশনের জন্য এসির সাইজ অনুপাতে দেওয়াল কাটতে হয় যা কিছুটা ঝামেলাপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। পাশাপাশি উইন্ডো এসি ব্যবহারে শব্দের পরিমান কিছুটা বেশি যা অনেকের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বাংলাদেশে স্প্লিট এসির তুলনায় উইন্ডো এসি প্রায় ৪০% কম দামে পাওয়া যায়।
স্প্লিট এসির সুবিধা কি এবং দাম কত?
স্প্লিট এয়ার কন্ডিশনারের দুটি অংশ রয়েছে - বাহিরের ইউনিট এবং ইনডোর ইউনিট। স্প্লিট এয়ার কন্ডিশনার কম বিদ্যুৎ খরচ করে এবং শব্দহীন। অন্যান্য এয়ার কন্ডিশনারের তুলনায় স্প্লিট এসি ভাল তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, স্প্লিট এসির দাম একসময় বেশি ছিলো, বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে বাংলাদেশে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে স্প্লিট এসি পাওয়া যায় সাথে ইন্সটলেশন খরচ লাগতে পারে।
পোর্টেবল এসিতে কি ইন্সটলেশন প্রয়োজন হয়?
পোর্টেবল এয়ার কন্ডিশনারে কোনও ইনস্টলেশন প্রয়োজন হয় না এবং এক রুম থেকে অন্য রুমে বহন করা যেতে পারে। তবে ঘরের গরম বাতাস বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য একটি পাইপ জানালা দিয়ে বের করে রাখতে হয়। এতে আলাদা করে ছিদ্র করার কোনো প্রয়োজন নেই।
কত টনের এসি প্রয়োজন?
১০০ বর্গফুট পর্যন্ত কক্ষের আকারের জন্য ১ টন এসি যথেষ্ট। ১.৫ টন এসি আপনার ঘরটির ১৫০ বর্গক্ষেত্র পর্যন্ত যথেষ্ট ঠান্ডা করতে পারবে। ২ টন এসি ২০০ বর্গফুট পর্যন্ত করতে পারে। যদিও আরও স্পেস এয়ার কন্ডিশনার দ্বারা ঠাণ্ডা করা যায় তবে এই অনুমানটি এসির কম্প্রেসসরের লোড কমিয়ে এসিকে ভাল রাখবে।
বাংলাদেশে কি হাফ-টন এসি পাওয়া যায়?
বাংলাদেশে হাফ-টন এসি পাওয়া যায় না, তবে কম ক্যাপাসিটির এসির মধ্যে এক টন এসি তুলনামূলক বেশি জনপ্রিয়।
কোন এসিতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়?
বাংলাদেশে, ৩ স্টার এবং ৫ স্টার নন-ইনভার্টার এসি পাওয়া যায় যা তাদের স্টার রেটিং এর উপর ভিত্তি করে শক্তি সাশ্রয়ী হয়। ১.৫ টন ৩-স্টার রেটিং এসি প্রতি ঘন্টায় ১.৬ ইউনিট এবং ৫-স্টার রেটযুক্ত এসি প্রতি ঘন্টায় ১.৫ ইউনিট খরচ করে। আরেকটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ইনভার্টার এসি তাদের সুপার শক্তি সাশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে এবং এই এসিগুলো ৬০% পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে থাকে।
এসির দাম কত?
মনে রাখবেন, এসির দাম নির্ভর করে এর ব্র্যান্ড, বৈশিষ্ট্য এবং কতটুকু জায়গা কাভার করতে চান তার উপর। কম দামে মধ্যে কিছু এসি কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো বেশ ভাল এবং এইধরনের এসি কিনলে বাংলাদেশে এসির দাম ২৬,০০০ টাকা থেকে শুরু হবে যা কমপক্ষে ১০০ বর্গফুট এলাকা কাভার করবে সাথে সেটআপের জন্য অতিরিক্ত খরচ প্রয়োজন হবে তাই মোট প্রায় ৩০,০০০ টাকার মত লাগবে। যদি আরও জায়গা ঠান্ডা করতে চান বা ঘরটি বড় হয় তবে কমপক্ষে ৪০,০০০ টাকার এসি প্রয়োজন। যদি জনপ্রিয় ব্রান্ডের এসি কিনতে চান তবে বাংলাদেশে সর্বনিম্ন দাম হবে ৫০,০০০ টাকা।
কোন ব্র্যান্ডের এসি কিনবেন?
বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায়। চীনের তৈরি এসি বাংলাদেশে তাদের কম দামের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়। এর মধ্যে গ্রী এসি ভাল কোয়ালিটি এবং মধ্য-বাজেটের জন্য ভাল। মিডিয়া এসি মানসম্পন্ন পরিষেবা সহ খুব কম দামের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও সিগো এসি, ক্যারিয়ার এসি কম দামে ভালো এবং প্রত্যাশিত মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে। আর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড যেমন জেনারেল এসি, প্যানাসনিক এসি, স্যামসাং এসি, এলজি এসি, শার্প এসি, তোশিবা এসি, ফুজিৎসু এসি বাংলাদেশের শীর্ষ-শ্রেণীর এসি।
এসি স্বাস্থ্য বাটনের কাজ কী?
বাংলাদেশে এসির অনেক নতুন মডেলে স্বাস্থ্যগত কার্যকারিতা রয়েছে এবং সাধারণত এসির রিমোটে এটি আইকন বাটনে চিহ্নিত করা থাকে। এসির ব্র্যান্ডের উপর ভিত্তি করে আইকন ভিন্ন হতে পারে। এটি আয়ন তৈরি করে বাতাসকে পরিষ্কার করে এবং ধুলো, পোলেন, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। ফলে বাতাস পরিষ্কার হয় এবং বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা হয়। যাইহোক, তবে এটি কখনও কখনও বাতাসে ওজোন তৈরি করে ফলে অনেকের ফুসফুসে জ্বালাতন করতে পারে। তবে বেশিরভাগ এসিতে এটি চালু বা বন্ধ করার সুবিধা রয়েছে।
এসি-তে স্ক্যাভেঞ্জিং ফাংশন কী?
এসি স্ক্যাভেঞ্জিং ফাংশন সেরা স্বাস্থ্যকর ফাংশনগুলির মধ্যে একটি। এটি ঘরের গন্ধ দূর করে ঘরের বাতাসকে ধীরে ধীরে সরিয়ে বাইরে থেকে নতুন বাতাস প্রবেশ করিয়ে। সুতরাং, ঘরে সর্বদা তাজা বাতাস থাকবে।
এসির বিশেষ ফাংশন যা আপনার দৈনন্দিন জীবনকে বদলে দিবে
প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাটঃ প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট যুক্ত এসি দিনের বিভিন্ন সময়ের জন্য বিভিন্ন তাপমাত্রায় সেট করার সুবিধা প্রদান করে। ফলে বাসা বা অফিসে প্রয়োজন অনুযায়ী আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করা যায়।
স্লিপ মোডঃ এসির স্লিপ মোড তাপমাত্রা এবং ফ্যানের গতিকে সামঞ্জস্য করে আরামদায়ক ঘুমের পরিবেশ তৈরি করে।
ডিহিউমিডিফায়ারঃ ডিহিউমিডিফায়ার ফাংশন বাতাস থেকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা অপসারণ করে, বাসা-বাড়ি বা অফিসের পরিবেশকে আরও আরামদায়ক করে তোলে। এছাড়াও, ফাঙ্গাস কিংবা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের ঝুকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
স্মার্ট কন্ট্রোলঃ এছাড়াও বাংলাদেশে কিছু এয়ার কন্ডিশনার স্মার্ট কন্ট্রোল টেকনোলজিসহ পাওয়া যায়। ফলে, দূরের অবস্থান থেকে সহজেই স্মার্টফোন বা অন্যন্য স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যেমে এসির তাপমাত্রা এবং সেটিংস সামঞ্জস্য করা যায়।
সেন্ট্রাল এসি কোথায় ব্যবহার করা হয়?
সেন্ট্রাল এসির সব ইউনিট মূলত এক জায়গা থাকে এবং এসি ডাক্টের মাধ্যমে শীতল বাতাস প্রয়োজনীয় স্থানে সরবারহ করে থাকে। ফলে এই ধরনের এসি নিয়ন্ত্রণ তুলনামূলক সহজ হওয়ায় সাধারণত হাসপাতাল, শপিং মল এবং কমার্শিয়াল স্পেসে অধিক ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া, সেন্ট্রাল এসি রুমকে সামঞ্জস্যভাবে শীতল করার পাশাপাশি পরিবেশকেও সতেজ রাখে। সাধারণত সেন্ট্রাল এসির ক্যাপাসিটি ১০ থেকে ৫০০ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে।